চট্টগ্রামে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরম পোশাক ও কম্বল বিক্রির ধুম

দেশজুড়ে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। চট্টগ্রাম নগরেও কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর ও সন্ধ্যায় হিমেল বাতাসের তীব্রতাও বেড়েছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শীতের পোশাক বিক্রির ধুম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে অভিজাত মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানে জমে ওঠেছে শীতের কাপড় বিকিকিনি। শীতের মৌসুমের শুরুতে যেসব ব্যবসায়ী ক্রেতা-খরায় ভুগেছেন তারাই এখন জমজমাট ব্যবসা করছেন। এর মধ্যে আগের চেয়ে তাদের বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, শীতের তীব্রতার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রেতারা পোশাকের দামও বাড়িয়েছে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতের দোকান সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে শীতের পোশাক কিনতে অভিজাত শ্রেণি ভিড় করছে নিউমার্কেট, জহুর হকার্স মার্কেট, রিয়াজুদ্দিনবাজার, টেরিবাজার, মতি টাওয়ার, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, সানমার ওস্যান সিটি, ফিনলে স্কয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টারে।

এছাড়াও নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ শীতের কাপড় ও কম্বল কিনতে ভিড় জমাচ্ছে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ভ্রাম্যমাণ হকারদের কাছে।

জানা গেছে, নগরের ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ হকারদের কাছেই শীতের কাপড় কিনতে বেশি ভিড় করছে ক্রেতারা। সপ্তাহ দুয়েক আগেও এসব হকারদের দৈনিক বিক্রি ছিল ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিক্রি দ্বিগুণ হয়েছে। অনেকে দৈনিক ৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করছেন। এছাড়া ফুটপাতের বিভিন্ন কমফোর্ট কম্বল বিক্রেতাদেরও বিক্রি বেড়েছে গত দু’সপ্তাহে। আগে তারা দৈনিক ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলেও শীতের তীব্রতা বাড়ার পর সেই বিক্রি দাঁড়িয়েছে দৈনিক ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায়।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাতে কমফোর্ট কম্বল বিক্রি করতে বসা ব্যবসায়ীরা জানান, দু’সপ্তাহ আগেও আমাদের দৈনিক বিক্রি ছিলো ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে। কিন্তু শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতারাও কিনতে দোকানে ভিড় করছেন। এখানে বিভিন্ন মার্কেটের চেয়ে কম দামে কাপড় পাওয়া যায়। এখন তাদের প্রতিদিন ২০ হাজারের ওপর বিক্রি হচ্ছে।

আখতারুজ্জামান সেন্টারে শীতের পোশাক কিনতে আসা রিদুয়াল বারী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসের তীব্রতাও বেড়েছে। তাই নিজের ও বাচ্চার জন্য শীতের কাপড় কিনতে আসলাম। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের পোশাকের দামও গত বছরের তুলনায় একটু বেশি।’

রিয়াজউদ্দিন বাজারের কথা হয় গৃহিণী শাকিলা শর্মিলার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ বছর শীত একটু কম পড়বে মনে করে আর শীতের পোশাক কেনা হয়নি। কিন্তু ২-৩ দিন ধরে বেশ শীত পড়ছে, তাই গরম কাপড় কিনতে আসলাম। বাচ্চাদের জন্য কম্বল, সুয়েটার এবং নিজের জন্য একটি শাল নিলাম। দাম কিছুটা বেশি।’

জহুর হকার্স মার্কেটের সামনে ফুটপাত থেকে পরিবারের জন্য শীতের পোশাক কিনছিলেন দিনমজুর ফারুক মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ, শীতের বস্ত্র কি জানি না। শেষ রাতে প্রচুর শীত লাগে। আমরা বউ-জামাই কোনোমতে থাকতে পারলেও ছেলেমেয়েরা ঘুমাতে পারছে না। এখানে কম দামে কিছু গরম কাপড় কিনলাম। ছেলেমেয়েরা এগুলো পেয়ে খুশি হয়ে যাবে।’

হকার্স মার্কেটের সামনের ফুটপাতে শীতের পোশাক বিক্রি করেন আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেশে শৈত্যপ্রবাহ চলছে, যার ফলে কয়েকদিন ধরে শীতের পোশাক বিক্রি বেড়েছে। কম দামে জ্যাকেট, সোয়েটার ও বিভিন্ন ধরনের কম্বল কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!