চট্টগ্রামে পানি বিদ্যুৎ নিয়ে অতিষ্ঠ মানুষ, ক্যাবের ক্ষোভ

চট্টগ্রামের অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। পানির অভাবে কষ্ট পাচ্ছে মানুষ। এমন দাবী করে ক্ষোভ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো ক্যাব নেতাদের এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, চট্টগ্রামে ছোট-বড় ২৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ১৩টিই বন্ধ। আবার কাপ্তাই লেকের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানির অভাবে ৪টি ইউনিটও বন্ধ রয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৭-৮ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। এদিকে একের পর এক নিত্যনতুন প্রকল্প হাতে নিলেও লবণাক্ততা ও সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি চট্টগ্রাম ওয়াসা। ফলে বিদ্যুৎ আর পানির সংকট মারাত্মকভাবে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে।

চট্টগ্রামে চালু রয়েছে ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫৮ মেগাওয়াট। কিন্তু এসব কেন্দ্র থেকে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৬৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এর মধ্যে খুঁড়িয়ে চলছে ৬টি।

অন্যদিকে, উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেক উৎপাদনে চলছে ৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৪টি বন্ধ রয়েছে। এখন মাত্র ১ নম্বর ইউনিটে (৪৬ মেগাওয়াট) ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪২০ মেগাওয়াটের ২টি (প্রতিটি ২১০ মেগাওয়াট করে) বিদ্যুৎ কেন্দ্র দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। শিকলবাহা ২২৫ মেগওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটিও অনেক দিন থেকে বন্ধ। বন্ধ রয়েছে ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট। ১০০ মেগাওয়াটের এনার্জি প্যাকও বন্ধ।

ক্যাব নেতারা দাবী করেন, প্রচণ্ড-তাপদাহে স্বাভাবিক জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে বিদ্যুতের লোডশেডিং মানুষের দুর্ভোগের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় বেশ কিছুদিন ধরে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি চলছে। বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৭-৮ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে।

এদিকে বছরের পর বছর ধরে বন্ধ রয়েছে টেকনাফ ও কাপ্তাই সোলার প্ল্যান্ট। তাই নামে মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তালিকায় না রেখে এগুলোকে সচল করা দরকার।

ক্যাব আরও বলছে, নগরজুড়ে পানির হাহাকারে জনজীবন আরও অতিষ্ঠ। পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম ওয়াসা একের পর এক নিত্যনতুন প্রকল্প হাতে নিলেও লবণাক্ততা ও সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। আর মাস গেলেই ঋণের কিস্তি পরিশোধসহ নানা বাহারি অজুহাতে পানির মূল্যবৃদ্ধির খড়গ দিয়ে ভোক্তাদেরকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। নগরবাসী সরকারি সেবা সংস্থাগুলোর এ ধরনের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম বন্ধে সরকারের আশু উদ্যোগ কামনা করছি। নতুবা জনঅসন্তোষ ক্রমশই দানা বাঁধবে।

বিএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!