চট্টগ্রামে কোরবানির হাট নিয়ে পুলিশের মানা শুনবে না সিটি কর্পোরেশন

করোনা ঝুঁকির চেয়েও ইজারার টাকা বড়

একদিকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি, অন্যদিকে ভয়াবহ যানজট— এই দুই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি) নগরীর তিনটি স্থানে কোরবানি পশুর হাট বসাতে আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) তাতে কান না দিয়ে ওই তিন স্থানসহ নগরীর সাতটি স্পটে বসাতে চায় পশুর হাট। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছে চসিক। বরং নগরের এই অভিভাবক সংস্থাটি বলছে, পুলিশের আপত্তি বড় কোনো বিষয় নয়। জায়গা থাকলে সিটি কর্পোরেশন পশুর হাট আরও বাড়াতো।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সিএমপি বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ খান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সুনির্দিষ্ট তিনটি স্থানে কোরবানি পশুর হাট বসানোয় আপত্তি জানিয়ে এসব অস্থায়ী হাটের অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানান। এতে জানিয়ে দেওয়া হয় করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোরবানি পশুর হাট নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থানও।

নগর পুলিশের আপত্তি উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে এবার যে সাতটি স্থানে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট বসানোর জন্য ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলো হচ্ছে সল্টগোলা রেলক্রসিং, স্টিলমিল, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ, কমল মহাজন হাট, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে টিকে গ্রুপের মাঠ এবং বড়পোল বন্দর মাঠ। গত বছর ছয়টি হাট বসলেও এবার বাড়ছে আরও একটি— বড়পোল বন্দর মাঠ। অন্যদিকে করোনার রেডজোন বন্দর-পতেঙ্গা এলাকার যে তিনটি হাট নিয়ে সিএমপি আপত্তি দিয়েছে, সেগুলো হচ্ছে স্টিল মিল, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এবং বড়পোলে বন্দর কর্তৃপক্ষের খালি জায়গাটি।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ইতিমধ্যে সাতটি স্থানে ইজারার প্রাথমিক অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছে। জেলা প্রশাসকের সবুজ সংকেত পেলেই ইজারা দেওয়া হবে ওই সাত স্থান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুলিশের আপত্তি বড় বিষয় নয়। আমাদের জায়গা থাকলে আরো পশুর হাট বাড়ানো যেত। কিন্তু নগরে সে রকম জায়গা নেই, তাই সাতচি স্থানে পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এতে মন্ত্রণালয়ের সায় আছে। এবার বড়পোল বন্দরের মাঠটি ব্যবহার করা হবে।’

অন্যদিকে সিএমপির উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ খান বলেন, ‘তিনটি পশুর হাটে সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে আমাদের আপত্তির কথা সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছি। এছাড়া জলাবদ্ধতা ও যানজটের কথা বিবেচনা করে ওই তিনটি স্থান বাদ দেওয়ার জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‌‘পতেঙ্গায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। কোরবানির পশু রাখা হলে এই সড়ক দিয়ে আর যানবাহন চালানো যাবে না। এতে শহরে ভয়াবহ যানজট হবে। এছাড়া করোনায় সামাজিক দূরত্ব মানাও সম্ভব হবে না।’

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!