চাপ সামলাতে পটিয়ায় করোনার নমুনা সংগ্রহ চলবে সপ্তাহজুড়ে

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিনই করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হবে। শনিবার (২৭ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম।

তবে অনেকে অনুরোধ করেছেন করোনা পজিটিভ রোগী ও যাদের উপসর্গ আছে তাদের যেন আলাদা করা হয়। বিষয়টি মাথায় রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সপ্তাহের শনি, সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র সন্দেহভাজনদের এবং রোববার ও বুধবার শুধুমাত্র ফলোআপ রোগীদের (যাদের আগে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে) নমুনা সংগ্রহ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

এজন্য হাসপাতালের দুজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সাথে আরও ৬ জন নতুন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নমুনা সংগ্রহের জন্য যুক্ত করা হয়েছে। এতে সপ্তাহজুড়ে নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রাজিব দে।

এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি ও টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোনও ধরণের সমস্যা হবে না বলেও জানান তিনি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতিদিন ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে বহির্বিভাগে নমুনা সংগ্রহ করা হবে ১৫ ও অন্তঃবিভাগে ৫ জনের।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, পটিয়া হাসপাতালে নমুনা দিতে আসা রোগীদের প্রচুর ভিড়। রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে নমুনা সংগ্রহকারীদের। তবে নমুনা দিতে এসে সামাজিক দূরত্ব না মানায় সংক্রমণ ঝুঁকিও বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ২ এপ্রিল হতে স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত রোগীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের বিস্তার ছড়িয়ে পড়ায় এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে হাসপাতালের ১১০ নম্বর রুমের ফ্লু কর্ণারে রোগের ধরনের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসকদের নির্দেশনায় নমুনা সংগ্রহ করা হতো। ২ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করে আসছিলেন। এর মধ্যে টেকনোলজিস্টরাও করোনা সংক্রমণের শিকার হন। ফলে এরা হোম আইসোলেশনে চলে যাওয়ায় গত ১০ জুন নমুনা সংগ্রহ বন্ধ ছিল। একদিন নমুনা সংগ্রহ বন্ধ থাকার পর চন্দনাইশ উপজেলা হতে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এনে সপ্তাহের শনি, সোম ও বুধবার তিনদিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

তবে প্রথম দিকে রোগীদের চাপ কিছুটা কম থাকলেও এখন চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন ২০ জনের নমুনা সংগ্রহের টার্গেট থাকলেও সংগ্রহ করা হচ্ছে আরও বেশি। ২ এপ্রিল হতে ২৫ জুন পর্যন্ত পটিয়া হাসপাতালে ৮৫৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৭০০ জনের রির্পোট পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ২৪ জুন পর্যন্ত ২৬৮ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০০ জন, মারা গেছেন ৫ জন। বাকিরা পটিয়া হাসপাতালের আইসোলেশনে, বাড়িতে ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

পটিয়া হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ জানায়, নমুনা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বলে দিলেও আগেভাগে এসে ভিড় করেন রোগীরা। একটু জ্বর-সর্দি হলেই ভয়ে চলে আসছেন নমুনা দিতে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব না মানায় পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে এসে নেগেটিভ লোকজনও পজিটিভ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাজিব দে বলেন, আমরা রোগীদের প্রতিনিয়ত সচেতন করার চেষ্টা করছি। নমুনা দিতে এসে রোগীরা যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন চেষ্টা করে যাচ্ছি। উপসর্গ না থাকলে অযথা কেউ যেন নমুনা দিতে ভিড় না জমান মাইকিংও করছি। তবুও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। প্রতিদিন যে হারে নমুনা দেওয়ার জন্য ভিড় করছে, সে হারে আমরা নমুনা সংগ্রহ করতে পারছি না। কারণ বিআইটিআইডি থেকে বলা হয়েছে, প্রতিদিন যেন ২০টির বেশি নমুনা পাঠানো না হয়।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!