চট্টগ্রামের তিনজনসহ করোনায় মৃত্যু ১৮ ব্যাংক কর্মকর্তার, আক্রান্ত অনেকেই

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া কমর্কর্তার সংখ্যা বাড়ছে ক্রমেই। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে তিনজনসহ সারা দেশে মারা গেছেন মোট ১৮ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী সারা দেশে পাঁচ শতাধিক ব্যাংকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া সর্দি-কাশি-জ্বরের মতো করোনার উপসর্গ নিয়ে কাজ করছেন হাজারেরও বেশি ব্যাংক কমর্কতা।

বাণিজ্যিক বিভিন্ন ব্যাংকে করোনায় আক্রান্ত ইতিমধ্যে মারা গেছেন মোট ১৮ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের রয়েছেন তিনজন। প্রাণঘা‌তী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সর্বশেষ ঘটনায় ১০ জুন মারা গেলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের লোহাগাড়া শাখার ম্যানেজার মেজবাউল হক আরমান (৪৮)। এর আগে ২৩ মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ওই ব্যাংকের পরিচালক ও এস আলম পরিবারের জ্যেষ্ঠ সন্তান মোরশেদুল আলম। এর একদিন আগে ২২ মে একই ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আহসানুল আলম মারুফও করোনায় আক্রান্ত হন। তিনি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের বড় ছেলে। বর্তমানে অবশ্য তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন।

১১ মে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা এনসিসি ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) জামশেদ হায়দার চৌধুরী। ৬ জুন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কৃষি ব্যাংক বান্দরবান জেলার আলীকদম শাখার আমিরুল আজিজ।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) মাহবুব এলাহীসহ দুজন কর্মকর্তা, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম খান এবং মিজানুর রহমান, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের প্রশাসন শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার হাসিবুর রহমান, সিটি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের মুজতবা শাহরিয়ার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু সাঈদ এবং ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ক্যাশ ম্যানেজমন্ট বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সামসুদ্দিন, উত্তরা ব্যাংক শান্তিনগর শাখার কর্মকর্তা ওয়াহিদ মর্তুজা, ন্যাশনাল ব্যাংকের এসএভিপি মো. বাশার, অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা মো আব্দুল মালেক, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার ক্যাশ ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম ব্যবস্থাপক আশরাফ আলী।

যে ১৮ ব্যাংকারের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সোনালী ব্যাংকের তিনজন, দি সিটি ব্যাংকের তিনজন, রূপালী ব্যাংকের দুজন, জনতা ব্যাংকের দুজন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের দুজন, এনসিসি ব্যাংক চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার একজন, উত্তরা ব্যাংক শান্তিনগর শাখার একজন, ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন, অগ্রণী ব্যাংকের একজন ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একজন ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লোহাগাড়া শাখার একজন।

সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকেই থাবা বসিয়েছে করোনাভাইরাস। এই চার ব্যাংকে অন্তত আড়াইশ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত বলে জানা গেছে। অন্যদিকে উপসর্গ নিয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন আরও পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে এখন পর্যন্ত ১২৮ জন কর্মকর্তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্তত ২০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপসর্গ নিয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!