করোনায় বাজার বন্ধ, গাছেই নষ্ট হবে শতকোটি টাকার পান

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন পান চাষ করে। সরকার করোনা ভাইরাস ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার ফলে অঘোষিত লকডাউনে কার্যত অচল সারাদেশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দেশের সব হাটবাজার। এ পরিস্থিতি যদি আর বেশি দিন চলে তাহলে গাছেই নষ্ট হবে শতকোটি টাকার পান। এমন আশংকা করেছেন অধিকাংশ পানচাষী। এ কারণে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মহেশখালী উপজেলার ২ লক্ষাধিক পানচাষী।

সচেতন মহল মনে করেন মহেশখালীর ৫০-৬০ ভাগ মানুষ পান বিক্রি করে সংসার চালায়। বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি, এটি আর কিছুদিন থাকলে না খেয়ে মরতে হবে এ উপজেলা অধিকাংশ পানচাষীকে। যেহেতু তাদের আয়ের একমাত্র উৎস পানচাষ।

তাই পানের বাজার বন্ধ না করে নিয়ন্ত্রিতভাবে পান বেচা-কেনার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এখানকার পানচাষীরা।

জানা গেছে, মহেশখালী পৌরসভা, উপজেলার বড় মহেশখালী, ছোট মহেশখালী, হোয়ানক, কালারমারছড়া ও শাপলাপুর ইউনিয়নের প্রায় এলাকায় পানচাষ হয়ে থাকে। পাশাপাশি এসব এলাকার নির্দিষ্টস্থানে রয়েছে পানের বাজার। তবে প্রতিটি বাজারের আশেপাশে রয়েছে বড় বড় মাঠও। করোনা এই লকডাউনের সময়ে বিকল্প মাঠগুলোতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পানের বাজার চালু রাখার দাবি জানাচ্ছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।

করোনায় বাজার বন্ধ, গাছেই নষ্ট হবে শতকোটি টাকার পান 1

বেশ কয়েকজন পানচাষী জানান, করোনার কারণে এমনিতে পানের দাম কমে গেছে। এর মধ্যে পানেরবাজার বন্ধ থাকলে গাছেই নষ্ট হয়ে যাবে অনন্ত শতকোটি টাকার পান। বাজার বন্ধ থাকলে পান বিক্রির আর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। যার ফলে পান বিক্রি করতে না পারলে পানের জড়িত ২ লক্ষাধিক মানুষ অর্থাভাবে চরমভাবে খাদ্য সংকটে পড়বে।

অন্যদিকে পান ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার ভাইরাসের কারণে গণজমায়েত করা যাচ্ছে না। কিন্তু পানের বাজারে গণজমায়েত হয় ঠিক। তবে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পান বেচা-কেনার বাজার বসানো যাবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্দিষ্ট বাজার বাদ দিয়ে বিভিন্ন এলাকার বিশাল মাঠে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পদ্ধতি চালু করে পানের বেচা-কেনা করা যাবে।

মহেশখালীর হোয়ানক টাইমবাজার পানবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সরওয়ার বলেন, গণজমায়েত এড়াতে হলে বর্তমানে যেসব স্থানে বাজার হয় তা সেখানে বাজার বসানো যাবে না। বিকল্প হিসেবে আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন বিশালাকার খোলা মাঠগুলোতে পানের বাজার বসানো যাবে। সেখানে করোনা সংক্রমণ রোধের নিয়ম মেনে পান ক্রেতা ও বিক্রেতারা নির্দিষ্ট দূরত বজায় রেখে নিরাপদভাবে পান বেচাকেনা করতে পারবে। সবাইকে দূরত্ব বজায়ে সচেতন এবং কঠোর হতে হবে।

চট্টগ্রাম, পটিয়া, কেরানীহাটসহ পানের বড় বড় আড়তগুলো এভাবে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে চালু রয়েছে বলে জানা গেছে।

মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আলম বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে সরকারের নির্দেশনা অবশ্যই মানতে হবে।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামিরুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বাজারের নামে কোনোভাবেই জমায়েত হতে দেওয়া হবে না। পানেরবাজার একদম বন্ধ করে দিলে যে ক্ষতি হবে তা বিবেচনা করে বিকল্প উপায় খোঁজা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!