ঝরনায় সবুজে সেজেছে বায়েজিদের ‘সবুজ উদ্যান’

বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে/ বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে/ দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা/ দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু/ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া/ ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া/ একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু—কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার আদলেই যেন চট্টগ্রাম নগরবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে ‘বায়েজিদ সবুজ উদ্যান’। এ যেন বাড়ির কাছেই আরশি নগর।

ইটপাথরের জঞ্জালে ভরা নগরীতে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশের দেখা পাওয়াই যেন কষ্টসাধ্য। প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেয়ার জায়গাও তেমন একটা নেই। সপ্তাহব্যাপী কাজে ডুবে থাকা মানুষের ছুটির দিনে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়ার মতন জায়গা তৈরি হয়েছে নগরীর বায়েজিদ থানাধীন সেনানিবাস সড়কের বাম পাশে ‘বায়েজিদ সবুজ উদ্যান’। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এ উদ্যান আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে।

উদ্যানে পরতে পরতে সাজানো ৪১ প্রজাতির বৃক্ষরাজির সবুজায়ন। হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বসে দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতে রয়েছে বসার বেঞ্চ। প্রায় ৪ হাজার ফুটের ওয়াকওয়ে। শিশুদের সময় কাটানোর বাহারি খেলনা। চারদিকে আলোর ফোয়ারা। ৬০ ফুট ব্যাসের জলাধার, পানির ঝরনাধারা। দুই একরের বিশাল জায়গাজুড়ে বায়েজিদ সবুজ উদ্যান। আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পর নগরবাসীর জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আরেকটি উপহার। ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও এ প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে মাত্র ৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

প্রকল্প পরিচালক ও গণপূর্ত সার্কেল-১ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উজির আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নগরবাসীর জন্য উপহার। সপরিবারে ভালো সময় কাটানোর জন্যই এই প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র। উদ্বোধনের পর নগরবাসীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

বায়েজিদ সবুজ উদ্যানে যা রয়েছে
প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র সবুজ উদ্যানে রয়েছে ২টি সৃদৃশ্য ফটক। বসার বেঞ্চ আছে একক ৩৯টি, দ্বৈত ৭টি। ৬০ ফুট ব্যাসের জলাধারের দুই পাশে উন্মুক্ত গ্যালারি রাখা হয়েছে। জলাধারে পানি রাখা হবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ফুট। ১ হাজার ২০০ ফুট সীমানা প্রাচীর রয়েছে। পার্কে আসা লোকজনের জন্য নারী-পুরুষের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা টয়লেট। এ ছাড়াও ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরায় মনিটরিং হবে উদ্যানটি। বাগানে সবুজ ঘাসে ও গাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছিটানোর জন্য রয়েছে ৬০টি স্প্রিঙ্কলার। পুরো উদ্যানে ১০৮টি কম্পাউন্ড লাইট, ১৬টি গার্ডেন লাইট, ৫৫টি ফাউন্টেন লাইট রয়েছে। সকালে ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি ও শরীর চর্চার জন্য এবং বিকালে সপরিবারে বেড়ানোর জন্য উদ্যানটি খোলা রাখা হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

এসআর/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!