আফিফের রাজশাহীর কাছে মালানের কুমিল্লার হার

সেঞ্চুরি করেও মালানের হারের দুঃখ

বিপিএল চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনের শেষ ম্যাচটি ছিল রাজশাহী রয়্যালস বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের। কিন্তু ম্যাচ শেষে সেটি হয়ে উঠে ডেভিড মালান আর আফিফ হোসেনের লড়াই। আরও খোলাসা করে বললে দুই দলের দুই ওপেনারের লড়াই। যে লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের জাতীয় তারকা ডেভিড মালান সেঞ্চুরি করেও লড়াইয়ে পারেননি বাংলাদেশি সম্ভাবনমায়ী জাতীয় তারকা আফিফের অর্ধশতকের সাথে। ৫৩ বলে ৭৬ রান করে আফিফ হোসেন ছাড়িয়ে গেলেন মালানের ৫৪ বলে ১০০ রানকে। কুমিল্লার ১৭০ রান রাজশাহী পেরিয়ে গেল নিজেদের নামের মতো রাজকীয় কায়দায়! ম্যাচ জিতল রাজশাহী ৭ উইকেটে। তখনো ম্যাচের ১৩ বল বাকি। পাঁচ ম্যাচে রাজশাহী রয়্যালসের এটি চতুর্থ জয়। আর ছয় ম্যাচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের চতুর্থ হার।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে ছিলেন দাউদ মালান (৮৪)। তবে দাপুটে খেলেও সেঞ্চুরির দেখা পাননি। রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ফের দ্যুতি ছড়ালেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের এ ওপেনার। তবে এবার আর মিস হলো না, সেঞ্চুরিটা তিনি ঠিকই আদায় করে নিলেন। ইংলিশ টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান মালানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ওপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে কুমিল্লার পুঁজি দাঁড়িয়েছে ৮ উইকেটে ১৭০। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নয় জন বোলার ব্যবহার করে রাজশাহী রয়্যালস দুশোর নিচে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখতে পেরে স্বস্তি পেয়েছে বটে! কারণ ইনিংসটা যে আরো বড় হতে পারত।

ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট হাতে লড়ে গেছেন কেবল মালান (১০০*)। ৫৪ বলে ৯ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে থেকে যান অপরাজিত। স্কোরটা ছাড়িয়ে যেতে পারত দুশো। যদি কুমিল্লা ম্যাচের প্রথম দশ ওভারের মতো রান তুলতে পারত। ১১.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান তুলে ফেলে ছিল কুমিল্লা। কিন্তু মালান বাদে বাকি ব্যাটসম্যানরা যে পুরোই ব্যর্থ। যে কারণে দুশো রানের স্কোর ছোঁয়া হলো না তাদের। সৌম্য সরকারের ২০ রানের সঙ্গে ক্যাপ্টেন দাসুন শানাকা করেন ১১। আর ভানুকা রাজাপাকসে দলীয় স্কোরে যোগ করেন ১০ রান। বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ দুই অঙ্কের স্কোরও স্পর্শ করতে পারেননি। ছিলেন ব্যাট হাতে আসা যাওয়ার মধ্যে।

রাজশাহীর আফিফ হোসেনের আরেকটি চোখ ধাধানো শট। তার ম্যাচ জয়ী ৭৬ রানের ইনিংসে ম্লান হয়ে যায় মালানের ১০০ রানের ইনিংসটি। ছবি: আজীম অনন
রাজশাহীর আফিফ হোসেনের আরেকটি চোখ ধাধানো শট। তার ম্যাচ জয়ী ৭৬ রানের ইনিংসে ম্লান হয়ে যায় মালানের ১০০ রানের ইনিংসটি। ছবি: আজীম অনন

রাজশাহীর মোহাম্মদ ইরফান, আবু জায়েদ, ও আন্দ্রে রাসেল শিকার করেন দুটি করে উইকেট। ত্রয়ী এ বোলার খরচ করেন যথাক্রমে ২৩, ২৪ ও ২৬ রান।

২০ ওভারে ম্যাচ জয়ের জন্য ১৭১ রান মামুলি টার্গেট নয়। কিন্তু রাজশাহী রয়্যালসের জন্য কাজটা সহজ হয়ে গেল দুই ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেনের ব্যাটে। এদের ওপেনিং জুটিতে এলো ৭ ওভারে ৬০ রান। লিটন দাস ১৯ বলে ২৭ রান করে ফিরলেন। কিন্তু অন্য প্রান্তে আফিফ হোসেন তখন ব্যাট হাতে দুর্বার! ২ ছক্কা ৮ বাউন্ডারিতে ৫৩ বলে ৭৬ রান করে আফিফ যখন উইকেট ছাড়লেন তখন ম্যাচ জয়ে থেকে মাত্র ৩৯ রান দূরত্বে দাঁড়িয়ে রাজশাহী।

প্রায় চোখের পলক পড়তে না পড়তেই বাকিটা সময় ঝটপট ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন রবি বোপারা ও আন্দ্রে রাসেল। মাত্র ১৬ বলে এই দুজনের জুটিতে যোগ হলো অপরাজিত ৩৯ রান! ২২ বলে ১ ছক্কা ৪ বাউন্ডারিতে বোপারা করলেন ৪০ রান। রাসেল মাত্র ৮ বল খেলার সুযোগ পেলেন। তাতেই ১ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে ২১ রানে রাজশাহী অধিনায়ক নট-আউট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ১৭০/৮ (২০ ওভারে, মালান ১০০*, সৌম্য ২০; রাসেল ২/২৬, ইরফান ২/২৩ ও আবু জায়েদ ২/২৪)।
রাজশাহী রয়্যালস: ১৭১/৩ (১৭.৫ ওভারে, লিটন ২৭, আফিফ ৭৬, বোপারা ৪০*, রাসেল ২১*; আল-আমিন ২/৪৯)।
ফল: রাজশাহী রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আফিফ হোসেন (রাজশাহী) ও দাউদ মালান (কুমিল্লা)

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!