লোহাগাড়ায় নারীর রহস্যজনক মৃত্যু

স্বামী-সন্তানের দুরকম বক্তব্য

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সফুরা খাতুন নামের ৪৫ বছর বয়সী এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হওয়ার পর লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জঙ্গল বড়হাতিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার ওই নারী গেলেও মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৭টা পর্যন্ত তার লাশ দাফন তো দূরের কথা, কবরও খনন করতে পারেনি পরিবার।

এসব তথ্য জানিয়েছেন সফুরা খাতুনের প্রথম ঘরের ছেলে লোকমান হাকিম। নিহত সফুরা খাতুন জঙ্গল বড়হাতিয়া এলাকার মোস্তফা আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী।

সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে সফুরা খাতুনের স্বামী আবুল কাশেম মারা গেলে প্রতিবেশি মোস্তফা আলী তাকে বিয়ে করেন।

সফুরা খাতুনের প্রথম ঘরের পুত্র লোকমান হাকিমের অভিযোগ, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে তার মা সফুরা খাতুনকে সৎবাবা মোস্তফা আলী কয়েক দফা মারধর করে। পরের দিন সোমাবার সকাল ৮টায় সফুরা খাতুনকে ফের মারধর করেন মোস্তফা আলী। এরপর দুপুরের দিকে স্থানীয়দের কাছ খবর পান তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

লোকমান হাকিম বলেন, ‘মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সৎবাবা মোস্তফা আলীর ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি আমাদের মা যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় বাসায় চটফট করছিলেন তখন সৎবাবা (মোস্তফা আলী) বাসায় ছিলেন। স্থানীয়রা মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে এগিয়ে গেলেও সৎবাবা হাসপাতালে নিতে দেয়নি। আমাদের সন্দেহ মাকে দফায় দফায় নির্যাতনের পর বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে দিয়েছে অথবা গলাটিপে হত্যার পর কথিত বিষ পানের গুজব ছড়াচ্ছে। কারণ লাশের মুখে বিষের কোনো গন্ধ নেই। পরে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বাড়িতে আনার পর লাশ দাফনেও বাধা দিচ্ছে প্রথম ঘরের ছেলেরা।’

স্বামী মোস্তফা আলী জানান, সামান্য তর্কবিতর্ককে কেন্দ্র করে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ছফুরা খাতুন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সফুরা খাতুনের প্রথম ঘরের ছেলেরা দ্বিতীয় স্বামীর জায়গায় কবর দিতে আসলে দ্বিতীয় স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা বাধা দিচ্ছে। ফলে কবর দিতে পারেনি। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ বলেন, ‘সফুরা খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দাফন করতে না দেওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেন নি। এখনই খবর নিচ্ছি।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!