আনোয়ারায় করোনা পরীক্ষায় বড় চ্যালেঞ্জ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সংকট

দিন দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। সন্দেহজনকরাও নমুনা পরীক্ষার জন্য উপজেলা হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ভিড় করছে। তবে হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট তিনজনের স্থানে রয়েছেন একজন। এরমধ্যে প্রতিদিন করোনা নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব ধরনের পরীক্ষা করছেন শুধু একজনই। আবার সেটা পাঠানোর জন্য যাচ্ছেন নিজেও। মানুষের বাড়তি চাপে হিমশিম খাচ্ছে, তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থেমে নেই প্রদীপ। এমনটায় বলছিলেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স টেকনোলজিস্ট ল্যাবের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রদীপ দে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুন) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে অনেকে নমুনা সংগ্রহ করতে এসেছেন। রোগীর নাম-ঠিকানা লিখে দেওয়া থেকে প্রাথমিক এসব কাজ করে দেওয়ার মতো কোনো লোক না থাকায়, তাকে একাই সব সামলাতে হয়। উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে করোনা উপসর্গ বা সন্দেহ নিয়ে হাসপাতালে ৩০ জন নমুনা সংগ্রহ করিয়েছেন। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব ধরনের পরীক্ষা করছেন একজন টেকনোলজিস্ট ও তার সহকারী। মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের স্বল্পতা থাকায় করোনা সংকটে সঠিকভাবে নমুনা পরীক্ষা-চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া কোনো কারণে যদি হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যায়, উপজেলার মানুষ চরম বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই।

এমন পরিস্থিতিতে জরুরি-ভিত্তিতে এ হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে মনে করেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। এ পর্যন্ত তারা উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে আসা ২৩২ জন নমুনা সংগ্রহ করেছে। এদের মধ্যে ২৫ জনের করোনা পজিটিভ আসে এবং করোনামুক্ত হয়েছেন ৯ জন আর একজনের মৃত্যু হয়েছে।

আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স ল্যাবের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রদীপ দে বলেন, করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে আমি নিজে একা কাজ করে যাচ্ছি। সেবা দিয়ে যাচ্ছি করোনা উপসর্গ বা সন্দেহ করে নমুনা দিতে আসা রোগীদের। করোনা নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব ধরণের পরীক্ষা আমি নিজেই করছি এবং ফৌজদারহাট বিআইটিআইডির ল্যাবে নমুনা নিয়ে নিজে যাচ্ছি ও পাঠাচ্ছি। আমরা সকালে আসি, রাতে বের হই। তারপরও আক্ষেপ নেই। আমাদের ল্যাবের কাজের পাশাপাশি জনবল সংকটের কারণে স্যাম্পল কালেকশনের জন্য রোগীর বাসায় কিংবা হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের সমাধান করা খুব প্রয়োজন। সুরক্ষার জন্য নেই কোনো উন্নত মানের মাস্ক ও পিপিই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নিরাপত্তার জন্য নেই কোনো আলাদা যানবাহন। যেতে হয় হাসপাতারের অ্যাম্বুলেন্স বা নিজের ভাড়া করা গাড়িতে করে। ঘরে আমার বৃদ্ধ মা, ক্যান্সার আক্রান্ত বাবা, স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে একই বাসায় থাক যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ আমার জন্য, সেটা অন্তত আমি বুঝি। কিন্তু কিছুই করার নেই, জীবন যতক্ষণ রয়েছে ততক্ষণ এ সেবা দিয়ে যাব।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু জাহিদ মোহাম্মদ সাইফুদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!