অধিনায়ক তামিমের চওড়া ব্যাটে চড়ে বরিশালের রাজশাহী পার

তামিম ইকবালের ব্যাট যেদিন হাসে সেদিন বিপক্ষ দলের বোলারদের ‘কান্না’ ছাড়া উপায় থাকে না। অনেক দিন পর আবারও হেসেছে তামিমের ব্যাট, তাতে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে প্রথম জয়োল্লাসে হাসলো ফরচুন বরিশাল। এক দলের সামনে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার হাতছানি, আরেক দল খুঁজছে আসরে নিজেদের প্রথম জয়। এ অবস্থায় শনিবার (২৮ নভেম্বর) মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ও ফরচুন বরিশাল। আর তাতে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর অধিনায়ক তামিম ইকবালের অনবদ্য ফিফটিতে শীর্ষস্থানের খোঁজে থাকা মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল।

আগে ব্যাট করে রাজশাহীর ইনিংস থেমেছিল ৯ উইকেটে ১৩২ রানে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য মামুলি এই সংগ্রহ টপকে যেতে কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা ছিল না বরিশালের। তবে শেষদিকে কিছুটা উত্তেজনা ছড়াল ম্যাচ। যে উত্তেজনা থামিয়ে দিলেন অভিজ্ঞ তামিম টানা দুই ওভারে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে। অধিনায়ক তামিমের ফিফটির সঙ্গে চট্টগ্রামের তরুণ তুর্কী পারভেজ হোসেন ইমন ও তৌহিদ হৃদয়দের কার্যকরী ইনিংসের সুবাদে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে বরিশাল। টুর্নামেন্টে এটি তাদের প্রথম জয়।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা অবশ্য মনের মতো ছিল না বরিশালের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ৫ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মেহেদি হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলকে চাপে পড়তে দেননি তামিম ও পারভেজ ইমন। দুজন মিলে ৪৫ বলে গড়েন ৬১ রানের জুটি। ইনিংসের নবম ওভারে ৩ চার ও ১ ছয়ের ১৭ বলে ২৩ রান করে ফিরে যান পারভেজ ইমন।

পরে তৃতীয় উইকেট জুটিতে তৌহিদকে নিয়ে এগিয়ে যান তামিম, ৪৫ বলে তুলে নেন আসরে নিজের প্রথম ফিফটি। আরেক প্রান্ত ধরে রাখা তৌহিদ আউট হন দলীয় ১১২ রানের সময়। আউট হওয়ার আগে ২৪ বলে করেন ১৭ রান, যেখানে ছিল একটি ছয়ের মার। তৌহিদ আউট হওয়ার পর খানিক চাপ আসে বরিশালের ওপর, রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান আফিফ, ইরফান শুক্কুর রানআউট হন ১ রান করে।

তবে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে থাকা তামিম ১৮ ও ১৯তম ওভারে দুইটি ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন। শেষপর্যন্ত ১ ওভার হাতে রেখেই ম্যাচ জেতে বরিশাল। অপরাজিত ইনিংসে ৬১ বলে ৭৭ রান করেন তামিম। ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি সাজান ১০ চার ও ২ ছয়ের মারে।

এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিং নিয়েছিলেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তাসকিন আহমেদ আজও বরিশালের হয়ে শুরুতে গতির ঝড় তোলেন। তবে তাসকিনের বিপক্ষে সুবিধা করতে না পারলেও বরিশালের অপর পেসার সুমন খানকে আক্রমণের জন্য বেছে নিয়ে রাজশাহীকে ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলটির দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও আনিছুল ইসলাম ইমন।

দু’জনেই করেছেন ২৪ রান করে। এই রান করতে ইমন বল খেলেছেন ২৭টি, শান্ত ১৯টি। তিনে নামা রনি তালুকদার (৬) ও চারে নামা মোহাম্মদ আশরাফুল (৬) সুবিধা করতে পারেননি। কামরুল ইসলাম রাব্বি, মেহেদি হাসান মিরাজদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৬৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় রাজশাহী। ফজলে রাব্বি সেখান থেকে হাল ধরতে চেয়েছেন। তার ৩২ বলে ৩১ রানের ইনিংসটাকে আহামরি বলা না গেলেও দলটির স্কোর একশ ত্রিশ পেরুতে বড় ভূমিকা রেখেছেন রাব্বি। ফর্মে থাকা মেহেদি হাসান তিন ছক্কায় দলীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেছেন মাত্র ২৩ বল খেলে।

নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে এই ১৩২ রান তোলে রাজশাহী। বরিশালের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় চার উইকটে নিয়েছেন ডানহাতি পেসার। মেহেদি মিরাজ ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় নিয়েছেন ২ উইকেট।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!