মধ্যসাগরে ডুবছিল জাহাজ, তখনও ঘুমে ওরা ১০ জন!

বঙ্গোপসাগরে ফিশিং জাহাজ রাঙ্গাচোক্কা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ১০ জনের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা এখনো অজানা। তারা কী জাহাজের ভেতরেই আটকা পড়ে বা ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেছেন না জীবিত রয়েছেন তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। তাদের উদ্ধারে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের তৎপরতা চলমান থাকলেও নিখোঁজ কারো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তাদের ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ওই দশজনের কেউ উদ্ধার হয়নি বা কারো লাশও পাওয়া যায়নি।

এখনো নিখোঁজ রয়েছেন জসিম, নয়ন, রাসেল, রাকিব, রিয়াদ, মুন্না, ফরিদ, রাহুল, আরিফ, প্রকৌশলী মুনিরুজ্জামান।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে ও কক্সবাজার হতে ৩৫ মাইল পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে ২৩জন ক্রুসহ এফভি রাঙ্গাচোক্কা নামের ফিশিং জাহাজটি ডুবে যায়। খারাপ আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি ডুবেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়।

এ ঘটনায় ১২জন জীবিত উদ্ধার হলেও একজন নিহত ও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতের লাশ শুক্রবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জীবিতদের উদ্ধার করে নৌবাহিনী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কি ঘটেছে নিখোঁজ ১০ জনের ভাগ্যে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।

উদ্ধার হওয়া নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘জাহাজডুবির সময় কেবিনের মধ্যে অনেকেই ঘুমানো অবস্থায় ছিলো। কক্সবাজারসহ উপকূলীয় এলাকার হাসপাতালগুলোতে আমরাও খোঁজ খবর নিচ্ছি কিন্তু কারও সন্ধান এখনো পাইনি।তারা কী বাঁচতে পেরেছিলেন তা ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেছেন সেটি বলতে পারছি না।’

ধারণা করা হচ্ছে নিখোঁজরা ডুবে যাওয়া জাহাজের ভেতরেই আটকে ছিল। জাহাজটি ডুবে যাওয়ায় তারা বের হতে পারেনি। অথবা তারা ঘুমন্ত অবস্থায় থাকায় জাহাজ থেকে বের হতে পারেননি। তবে জাহাজটি উদ্ধার হলে তাদের সঠিক তথ্য পাওয়া যেত।

ওই জাহাজ ডুবিতে নিহত হন জাহাঙ্গীর (৫৪) নামের এক জেলে। তিনি ভোলার দৌলত খানের আলী হোসেনের ছেলে।

রাঙ্গাচোক্কা জাহাজের ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘জীবিত ১২ জনকে নৌবাহিনী হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান এখনো অব্যাহত থাকলেও কোন অগ্রগতি নেই। উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর দল।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের স্টাফ অফিসার (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ডুবে যাওয়া ফিশিং জাহাজটির পাশে এলএনজিবাহী জাহাজ ও সি পাওয়ার- ১ নামের জাহাজ থাকায় সাঁতরে এসে আশ্রয় নিয়েছে ১২ জন। নিখোঁজ ১০ জনের ভাগ্যে কি পরিণতি হয়েছে তা এখনো অজানা। ধারণা করা হচ্ছে তারা ওই জাহাজের ভিতরেই আটকে পড়েছে। কিন্তু সহসা জাহাজটি উদ্ধার করা সম্ভব না। কারণ ওখানে গভীরতা অনেক।’

তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জাহাজ নজরুল ও নৌবাহিনীর জাহাজ অপরাজেয়।

জীবিত যারা উদ্ধার হয়েছেন— জামাল (৪৮), ইব্রাহিম (১৯), রাজিব (২৫), নজুরুল ইসলাম (৩০), রায়হান (১৮), শাহ আলম (৪৮), নবির হোসেন (২৩), রিয়াজ (২৭), বেলাল (২৬), মনজুর এলাহি আলম (৩০), জামাল উদ্দিন (২৫), নাজিম (২৪)

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!