কালীপুর বিদ্যালয়ের চারদিকে গড়ে উঠেছে ১২ টি ইটভাটা

ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ১০নং পশ্চিম নিশ্চিন্তা কালীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে বিদ্যালয়ের চারদিকে আধাকিলোমিটারের মধ্যে গড়ে উঠেছে ১২টি ইটভাটা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানাবিধ সমস্যা নিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও ইটভাটার কালো ধোঁয়া, বালি ও গাড়ির শব্দের কারণে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ব›দ্ধ হয়ে গেছে স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ এলাকাবাসীর মনন বিকাশের অন্যতম মাধ্যম খেলাধুলা। ইটভাটার মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদ এক্ষেত্রে অনেকটা অসহায়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক কন্সিক মুৎসুদ্দী জানান, খলিফার পাড়া, নতুন পাড়া, সায়ের আহমদ পাড়া, মঘাছড়ি, কালীপুর, ছাল খাইয়ের বাড়ী ও খতিব নগর গ্রামের শত শত ছাত্রছাত্রীর প্রাইমারি শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম হলো এ স্কুলটি। বর্তমানে স্কুলের চারদিকে ইটভাটা স্থাপনের কারণে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাপকভাবে নষ্ট হতে চলেছে। স্কুলের কাছে (৫০ গজের মধ্যে) ইটভাটা হওয়ায় প্রায় সময় বাতাসের সাথে বালি ও ইটভাটার কালো ধোঁয়া শ্রেণী কক্ষে ঢোকায় ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। এ সমস্যা শুধু একদিনের নয়, ভাটা চলাকালীন প্রতিনিয়ত এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের। তারপরও সব যন্ত্রণা উপেক্ষা করে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। প্রতিবাদ করলেই শাস্তির খড়গস্বরুপ বাদলি হতে হয়।

তিনি বলেন, যেদিন চড়া রোদ এবং বাতাসের গতি বেশি থাকে সেদিন শিক্ষর্থীদের নিয়ে অসহনীয় যন্ত্রণা পোহাতে হয়, অনেকে গায়ের কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখে। ইতিমধ্যে এ যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী স্কুল ত্যাগ করে অন্য স্কুলে চলে গেছে। তারপরও বহাল তবিয়তে ইট তৈরি করছেন এল.আর.বি-৩, এস.এ.বি-১, কে.বি.এম-১, বি.আর.বি, এস.এম.বি, এ.টি.এম, বি.বি.আই, এ.বি.সি ও বি.বি.সি-১ ভাটার মালিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্কুলের দাতা কামরুল ইসলামও ইটভাটার মালিক।

ভাটা সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত এক মহিলা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইটভাটা চলাকালীন অবস্থায় আমাদেরও অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। পানির কলে (টিউবওয়ালে) ঠিক মতো পানি ওঠেনা, পুকুরের পানি কালো হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগীসহ বালির কারণে কাপড় চোপড় বাইরে শুকাতে পারিনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জহির উদ্দনি বলেন, আমিতো সবেমাত্র এখানে যোগদান করেছি। দু’একদিনের মধ্যে আমি স্কুলটি পরিদর্শনে যাব, গিয়ে যদি দেখি স্কুল সংলগ্নে ইটেরভাটা নির্মিত আছে তাহলে তা ব›েদ্ধ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, ইটভাটায় আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। যদি এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসে তাহলে অবশ্যই আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!