৩ বছর পর মুক্তি পেল মিনু, খুনের মামলায় আসামির বদলে সাজা খাটছিলেন এতদিন

খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমীর বদলে প্রায় তিন বছর ধরে কারাগারে থাকা মিনু আক্তার অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন।

বুধবার (১৬ জুন) বিকাল ৪টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর আগে একইদিন দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত মিনুকে মুক্তির আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মিনুর আইনজীবী এডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, হাইকোর্ট ৭ জুন মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দিলে আইনী কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শেষে আজ মিনু কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ এলাকায় কোহিনুর আক্তার ওরফে বেবী নামে এক নারী খুন হন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলায় কুলসুম আক্তার ওরফে কুলসুমী নামে এক নারী গ্রেপ্তার হন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত কুলসুমকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। রায়ের দিন আসামি কুলসুম আদালতে অনুপস্থিত থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তার পরের প্রেক্ষাপট বদলে যায়। ২০১৮ সালের ১২ জুন মিনু নামের এক নারীকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার সাজিয়ে আত্মসমর্পণ করালে আদালত মিনুকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়। ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল কুলসুম আক্তার হাইকোর্টে আপিল করেন। সেই সঙ্গে জামিনের আবেদনও করেন। চলতি বছরের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি আবেদন করেন।

ওই আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে পাঠানো আসামি প্রকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার। এ আবেদনের শুনানি শেষে আদালত কারাগারে থাকা মিনুকে আদালতের হাজির করে তার জবানবন্দি নেয়। জবানবন্দীতে মিনু বলেন, তার নাম মিনু, তিনি কুলসুম নন।

আদালত কারাগারের রেজিস্ট্রার ঘেঁটে চেহারার মিল দেখে একটি উপনথি হাইকোর্ট বিভাগে আপিল নথির সঙ্গে সংযুক্তির জন্য পাঠিয়ে দেয়। পরে হাইকোর্ট গত ৭ জুন নিরাপরাধ মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দেয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মিনুর আইনজীবী এডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, হাইকোর্ট ৭ জুন মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দেন। একই সময়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে চূড়ান্ত যাচাই বাছাইয়ের নির্দেশ দেন আদালত। তদন্ত শেষে প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দিলে তার ভিত্তিতে মিনুকে মুক্তির জন্য আদালতে মিনুর আইনজীবীকে বন্ড দিতে বলা হয়।

আইএমই/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!