১১ বছরের শিশু সংসার চালাতে যাত্রী টানে রিকশায়

বাবা হারিয়ে গেছে সাগরে, করোনায় মা কাজহারা

বাবা সাগরে মাছ শিকার করতেন আর মা গৃহকর্মী। কয়েক বছর আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফেরেনি বাবা। মা আর ছোট বোনকে নিয়ে শিশু আকিবের সংসার। করোনায় মার কোন কাজ নেই। আগে সাগরপাড়ে বেলুন বিক্রি করত আকিব। করোনার কারণে সেই কাজটিও বন্ধ হলে এখন রিকশা চালিয়ে তিনজনের পরিবারে আহার যোগাচ্ছে ১১ বছরের ছোট্ট বালক আকিব।

বুধবার (২৪ জুন) কক্সবাজার শহরের পেট্রোল পাম্প এলাকায় কথা হলে জীবিকা নিয়ে এমন দুঃসহ মুহূর্তের বর্ণনা দেয় আকিব। ছেড়া-মলিন পোশাকে রিকশায় বসে থাকা আকিব উদাসমুখে বলে, ‘ঘরে চাল-ডালও নেই, মা আর বোনের জন্য কোন খাবার নেই। তাই রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি।’

আকিব বলে, ‘আমার আব্বা মোজাম্মেল হক ২-৩ বছর আগে সাগরে মাছ শিকারে গিয়েছিল। তারপর আর ফেরেনি। মা জেসমিন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোন রকমে সংসার চালাত। তখন মাকে সংসারে একটু সাহায্য করতাম। সৈকতে বেলুন বিক্রি করতাম। করোনার লকডাউনে এখন কক্সবাজারে পর্যটক নেই তাই বেলুন বিক্রি করতে পারছি না।’

আকিব বলে, ‘আগে বেলুন বেচতাম। মাকে একটু সাহায্য করতে। সেটা খুব কষ্টের ছিল না। এখন করোনা আসায় মার কাজ নেই। ঘরে ছোট বোনও আছে। তাদের নিয়ে অনেক চিন্তা হয়। কেউ তো সাহায্য সারাজীবন করবে না। তাই রিকশা চালাচ্ছি। বেলুন বিক্রি করলে ব্যথা পেতাম না। এখন রিকশা চালিয়ে পায়ে ব্যথা হয়েছে।’

শিশু আকিব বলে, মা জানে না আমি রিকশা চালাই। মা ভাবছেন আমি বেলুনই বিক্রি করি। রিকশার কথা শুনলে মা কষ্ট পাবে। করোনা শেষ হলে আবার সব ভালো হবে। সব ঠিক হবে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারিতে কর্মহীন হয়ে নিম্নবিত্ত মানুষগুলো আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। দরিদ্র থেকে আরও দরিদ্র হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো। অনেকেই পুরনো পেশা বাদ দিয়ে জীবিকার জন্য অন্য কোন পেশা বেছে নিচ্ছে। কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ার ১১ বছর বয়সের আকিব তেমনই একজন দুর্ভাগা শিশু।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!