সিঙ্গাপুরে কেনাকাটা আমেরিকায় সফর, চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ কর্তার অভিনব জালিয়াতি

ভুয়া তথ্যে বিল তোলা হয় ২৪ লাখ টাকা

চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হয় সিঙ্গাপুরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। এই কেনাকাটার অংশ হিসেবে প্রি-শিপমেন্ট বা প্রাক-জাহাজীকরণ দেখতে বন্দরের তিন কর্মকর্তা সিঙ্গাপুরের বদলে গেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে। তথ্য গোপন করে এই অভিনব প্রতারণার ঘটনায় বন্দরের তহবিল থেকে গচ্চা যায় অতিরিক্ত ২৪ লাখ টাকা।

আমেরিকা ভ্রমণের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে ওই কর্মকর্তারা দাপ্তরিক কাগজপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জানান, যন্ত্রপাতিগুলো কেনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলাইনার একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ প্রকৃতপক্ষে যন্ত্রপাতিগুলো কেনা হয়েছে সিঙ্গাপুরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। পরে বিল অব এন্ট্রি এবং শিপিং ডকুমেন্টস যাচাই করার পর এই অভিনব প্রতারণার ঘটনা ধরা পড়ে। এমনকি এই প্রশ্নও উঠেছে যে, ওই কর্মকর্তারা আদৌ যুক্তরাষ্ট্রেও গিয়েছিলেন কিনা? নাকি না গিয়েই ২৪ লাখ টাকা মেরে দিয়েছেন?

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মেরিন প্রকৌশল বিভাগ সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কামিনস লিমিটেড থেকে নিউমুরিং লঞ্চ-১-এর ডকিং মেরামতের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি কেনে। এর অংশ হিসেবে যন্ত্রপাতিগুলো আগাম দেখার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের তিন কর্মকর্তার যাওয়ার কথা সিঙ্গাপুরে। কিন্তু এর বদলে তারা চলে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

সেখানে সাতদিনের বিশেষ ভ্রমণ শেষে ওই কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার কামিনস লিমিটেডের কারখানায় যন্ত্রপাতিগুলো পরিদর্শন করা হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওই যন্ত্রপাতিগুলো কেনাই হয়নি।

বিল অব এন্ট্রি এবং শিপিং ডকুমেন্টসে দেখা গেছে, নিউমুরিং লঞ্চ মেরামতের জন্য মেরিন প্রোপালসন ইঞ্জিন, গিয়ার বক্স, প্রোপেলার মিব্রলসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে। এতেই ধরা পড়ে ওই কর্মকর্তাদের জালিয়াতি।

এই তিন কর্মকর্তার অভিনব যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের সব খরচ বহন করা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের তহবিল থেকে। এই বাবদে যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরডেন্ট মেরিন লিমিটেডকে ২৪ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে ওই কর্মকর্তারা আদৌ যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছেন কিনা— এ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!