সাতকানিয়ায় বেপরোয়া ‘বাহিনী’, কথায় কথায় চলে গুলি

ভোটের বিবাদে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বাড়িতে গুলি

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. মহিউদ্দিনের বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও এই একই সন্ত্রাসী চক্র প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় এলাকাজুড়ে।
৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও এই একই সন্ত্রাসী চক্র প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় এলাকাজুড়ে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাত প্রায় ২ টায় এ ঘটনা ঘটে। মহিউদ্দিনের অভিযোগ, গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় মিন্টুর ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ তাকে হত্যা করার জন্য গুলিবর্ষণ করেছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেক মো. আবদুল হান্নান।

ওসি বলেন, নলুয়া পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা এলাকায় কিছু দুষ্কৃতকারী দীর্ঘদিন থেকে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। প্রভাবশালী কয়েকজন এসবের নেপথ্যে কাজ করছে। শনিবার রাতে খবর পেয়ে ঢেমশা তদন্তকেন্দ্র থেকে এসআই আবসার উদ্দিন ভূঁইয়া ও থানা থেকে এসআই প্রবীর মিত্রের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছেন। ঘটনার শিকার মো. মহিউদ্দিনের সাথেও কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মো. বকসুর ছেলে কামাল ও ফখরুদ্দিন মিন্টু সম্প্রতি প্রবাসে গিয়ে বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন। বড় ভাই মোস্তাকের বদান্যতায় তারা সৌদি আরব যান ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়। কিছু টাকা পয়সা রোজগার করলেই প্রথম বিরোধিতা করেন মোস্তাকের সাথে। বড় ভাই মোস্তাককে এখন বাড়ি থেকেই বিতাড়িত করা হয়েছে। একইভাবে তারা এখন পুরো এলাকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত তাদের ইন্ধন ও পৃষ্ঠপোষকতায় এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। গ্রুপের সক্রিয় সদস্যরা হলেন জামশেদ ওরফে ভাগিনা জামশেদ, মো. ফারুক ওরফে টাইগার ফারুক, শহিদুল ইসলাম ওরফে হাশেম শহিদ, জোবায়ের ওরফে মৌলানা জোবায়ের, রিয়াজ প্রমুখ। মিন্টু প্রবাসে থাকলেও তার হয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ করেন মনজুর ওরফে কানা মনজুর ও স্থানীয় মেম্বার মোরশেদ।

নলুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. মহিউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করি। ওই নির্বাচনে মো. মোরশেদ ছিলেন আমার প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের হুমকির পরও নির্বাচন করায় তারা আমার পিছু লেগেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা নির্বাচনকালীন বিভিন্ন সময় আমাকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছেন। পরবর্তীতে জোরপূর্বক ভোট ছিনিয়ে নিয়ে মিন্টুর ভাগিনা মোরশেদকে তারা নির্বাচনে জেতান। এজন্য মিন্টু বিদেশ থেকে দেশে আসেন কিছুদিনের জন্য। এসেই তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে দিনরাত সশস্ত্র মহড়া দিয়ে পুরো এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। নির্বাচনে জিতে হয়ে পড়েন আরও বেপরোয়া।’

মহিউদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের পরের দিন বিরোধিতাকারী ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রাথীদের বাড়িতে হামলা করেন তারা। তখন হোসাইন, রহিম, দিদার ও আমার বাড়িতে হামলা করা হয়। মারধর করা হয় বেশ কয়েকজনকে। ওই সময় আমার বাড়িতে অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে মিন্টুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। পরবর্তীতে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিলে মিন্টু আমার হাত ধরে ক্ষমা চান এবং মামলা না করার জন্য অনুনয় করেন। তাই সামাজিক শান্তি রক্ষায় আমিও সরল বিশ্বাসে তার কথা মেনে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেইনি। এরপরও তারা বিভিন্ন সময় আমার উপর হামলা করে। সর্বশেষ গত শনিবার প্রায় ২ টায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়িতে গুলিবর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটান। এ ঘটনায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!