সাতকানিয়ায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মারামারিতে নিহত ১, আহত ৬

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে সাতকানিয়ার ধর্মপুরের চাঁদেরপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আনোয়ার আলী (৫৫)। তিনি উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কুন্ডরকুল এলাকার মৃত কালু মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন ধর্মপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন (৪৫), আহমদুর রহমান (৫০), গিয়াস উদ্দিন (২৯), নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ফারহানা নাছরিন (৪৫), মোহাম্মদ হারুন (৪৩) ও আনজু আক্তার (৪২)।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে ধর্মপুর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী (আনারস প্রতীক) তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল সহকারে চাঁদেরপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাছির উদ্দিনের কর্মী-সমর্থকেরা দুই দিক থেকে ও সড়কের পাশের ভবনের ছাদ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীর মিছিলে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারেন।

জানা গেছে, ঘটনার এক পর্যায়ে দুই পক্ষই ইটপাটকেল ছুঁড়ে ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক আনোয়ার আলী হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে বিদ্রোহী প্রার্থী ইলিয়াছ চৌধুরীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে একটি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আনোয়ার আলীকে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকির কারণে এতদিন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় বের হতে পারিনি। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে চাঁদেরপাড়া এলাকায় প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় বের হই। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকেরা ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন ভবনের ওপর থেকে ইট ছুঁড়ে মারলে আমার সমর্থক আনোয়ার আলী বুকে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাছাড়া নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ফারহানাসহ আরও কয়েকজন আহত হন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন সড়কের দুই দিকে পাহারা বসানোর কারণে আহত ব্যক্তিদের যথাসময়ে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিকেলের দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে এনে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে আনোয়ার আলী মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাছির উদ্দিন বলেন, আমাদের কোনো লোক ইলিয়াছ চৌধুরীর প্রচারণায় হামলা করেনি। তারা অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রচারণায় বের হয়েছিলেন। তাদের হামলায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা কামাল উদ্দিন ও আহমদুর রহমান আহত হয়েছেন। যিনি মারা গেছেন, তিনি এলাকায় ডাকাত হিসেবে পরিচিত। কিভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে আমরা বলতে পারি না।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান বলেন, দুই ইউপি চেয়ারম্যান এর সংঘর্ষের সময় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকজন। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!