সাতকানিয়ায় গায়ের জোরে জায়গা দখলের চেষ্টা, লুটপাট-ভাঙচুর, বৃদ্ধা নারীকে মারধর

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় গায়ের জোরে অবৈধভাবে জমি দখল করার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দখল করার চেষ্টা চালায়। এর একপর্যায়ে জমির বৈধ মালিকের মাকেও তারা মারধর করে। এ ঘটনায় সাতকানিয়া থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হলেও সন্ত্রাসীরা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জাফর ডাক্তারের বাড়ির মোহাম্মদ ফারুকের কেনা বৈধ জমিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় একদল সন্ত্রাসী দা-রড ও কিরিচ নিয়ে জায়গার টিনের দেয়াল জোর করে ভেঙে ফেলে দখল করার চেষ্টা চালায়। সন্ত্রাসীরা টিনের বেড়া ও পাকা পিলারগুলো অন্তত ২০০ ফুট দূরে মসজিদের পুকুরের ভেতর ফেলে দেয়। ওই সময় বাধা দিতে গেলে তারা ফারুকের বয়োবৃদ্ধ মাকে মারধর করে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাতকানিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ফারুক। এতে তিনি এওচিয়া এলাকার নজির মুন্সির বাড়ির ফৌজুল কাদের চৌধুরী, মো. আজাদ, মো. ইসহাক ও মো. কফিলকে ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করেন।

সাতকানিয়া থানার অভিযোগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সালাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন।’

এওচিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম বলেন, ‘আজাদের বড় ভাই বশিরের কাছ থেকে বৈধভাবে জায়গা কিনেছেন ফারুক— যেখানে বশিরের নামে বিএসও আছে। সে অনুযায়ী ফারুকের নামেও বিএস সৃজিত নামজারি খতিয়ান হয়েছে। আর আমাদের উপস্থিতিতে বশিরের সম্মতিক্রমে ফারুক পরিমাপ করে এক গন্ডা জায়গা দখল বুঝে নিয়ে টিনের ঘেরাবেড়া দিয়ে ভোগদখলে আছেন।’

গত শুক্রবারের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুনেছি রাতে ফারুকের জায়গাটা ভাংচুর করা হয়েছে। এই কাজটা যারাই করুক, আমি চাই এটার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত মো. আজাদের গড়িমসির কথা উল্লেখ করে ইউপি সদস্য মো. সেলিম বলেন, ‘বিরোধ যদি কিছু থেকে থাকে, সেটা মীমাংসার জন্য আমি নিজেই আজাদদের সাথে কথা বলে পরিষদে আসার জন্য বলেছি বহুবার। কিন্তু তারা আমার কথা না মেনে পরিষদে কিংবা কোথাও কোনো বৈঠকে আসেননি।’

জায়গার পরিমাপক সার্ভেয়ার আব্দুল কাদের বলেন, ‘এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ফারুককে জায়গা পরিমাপ করে একগন্ডা জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইউপি সদস্যের পরামর্শক্রমে আমি সবার সামনে আইনগতভাবে ফারুককে তার দাতা বশিরের দলিল ও খতিয়ান পর্যালোচনাপূর্বক বুঝিয়েও দিয়েছি।’

এদিকে ভাঙচুরের শিকার ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘বশরের ভাই আজাদ দীর্ঘদিন ধরে আমার মাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে আসছিল— টিনের বেড়া তুলে ফেলবে এবং ভাংচুর চালাবে। এই আজাদ গং গত শুক্রবারের লুটপাট ও ভাঙচুরের কাজে জড়িত।’

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আজাদরা সংঘবদ্ধভাবে গভীর রাতে এই কাজ করেছে— এটা যে কেউ বলবে। কারণ আজাদের ভাই বশিরের কাছ থেকে জায়গা কেনার পর থেকেই তারা ফারুককে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!