শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসবে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি

ভগবান শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে নন্দনকানন ইসকন মন্দিরে চট্টগ্রাম ইসকনের ২৬তম বিভাগীয় রথযাত্রায় এবার বর্ণিল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ জুন) নন্দনকানন ইসকন মন্দিরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইসকনের ২৬ তম শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে এক সংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে রথযাত্রা উৎসবে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবিসহ সারাদেশে হিন্দু নির্যাতনে জড়িতদের বিচারেরও দাবি জানানো হয়।

সভায় আগামী ২০ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির এবং রথযাত্রা উৎসবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানানো হয়। রথযাত্রা উপলক্ষে এবার সাতদিনব্যাপী জেএম সেন হলে ভগবত সপ্তাহ পালন হবে।

২০ জুন রথযাত্রায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞানুষ্ঠান, শ্রীজগন্নাথদেবের মধ্যাহ্নকালীন ভোগারতি, ধর্ম মহাসম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বৈদিক নাটক অনুষ্ঠিত হবে।

মহাশোভাযাত্রা নন্দনকানের শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির সামনে থেকে শুরু হয়ে চেরাগি পাহাড়, আন্দরকিল্লা, বক্সিরহাট, লালদীঘির পাড়, কোতোয়ালীর মোড়, নিউমার্কেট, আমতলা, বোস ব্রাদার্স হয়ে নন্দনকানন শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রম এসে শেষ হবে।

এবারের রথযাত্রায় চুয়েট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ২২টি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। এছাড়াও প্রায় ১২০টির বেশি সংগঠন তাদের নিজস্ব ব্যানারে অংশগ্রহণ করবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে সভায় চট্টগ্রাম ইসকনের নন্দনকানন মন্দিরের অধ্যক্ষ পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সনাতন ধর্ম প্রচারে অগ্রগামী সংগঠন ইসকনের বিভিন্ন মঠ, মন্দির ও ভক্তদের ওপর হামলা বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষ শান্তিপ্রিয় মানুষের হৃদয়কে বিদীর্ণ করেছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সেই স্বাধীন বাংলাদেশে এইসব ঘটনা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যে বাংলাদেশে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনাকালে ভক্তদের ওপর হামলা করা হয় তা কি কোনো স্বাধীন বাংলাদেশের চিত্র হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও চট্টগ্রাম ইসকন নেতৃবৃন্দ রথযাত্রা উৎসবের দিন রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা, সনাতন ঐতিহ্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ বিলুপ্ত প্রায় মন্দির স্থাপনা, স্মৃতি স্থান ও তীর্থস্থান সমূহ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রসারের জন্য সরকারি বরাদ্দ নিশ্চিত করা, নন্দনকাননের রাধামাধব মন্দির ও লোকনাথ মন্দিরের অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্ত করা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে রূপদান করা, রথযাত্রায় অংশগ্রহণকারী জনগণের ভোগ্য খাদ্যবস্তু সমূহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রদান করা, প্রত্যেক মঠ, মন্দির ও দেবোত্তর সম্পত্তি সমূহের নিরাপত্তা প্রদান করার দাবি জানান।

এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশিষ ভট্টাচার্য , সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জল, নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, সুমন চৌধুরী।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসকন ন্যাশনাল কমিটির সদস্য সর্বমঙ্গল গৌর দাস, সুবলসখা দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!