রেলে একযুগে সবচেয়ে বড়ো রদবদল, ১৯ কর্মকর্তা বদলি

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে বড় ধরনের রদবদল ঘটেছে। একযোগে বদলি করা হয়েছে ১৯ কর্মকর্তাকে। গত একযুগে একসঙ্গে এতো ব্যাপক বদলির ঘটনা আর হয়নি। এতে রেলে বদলি আতংকও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রেলের এবারের রদবদলকে নিয়মিত বদলি হিসেবে দেখছেন রেলভবনের কর্তারা।

জানা যায়, বদলি হওয়া ১৯ জনের মধ্যে মাত্র একজন পদোন্নতিসহ বদলি হয়েছেন। সম্প্রতি রেল দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পর শীর্ষ পদে বড় ধরনের রদবদল করা হল। ১৭ ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মো. আবদুর রহিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলি আদেশ দেওয়া হয়েছে।

পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার এসএম মুরাদ হোসেনকে বাংলাদেশ রেলওয়ে (কর্মচারী) কল্যাণ ট্রাস্ট পূর্বাঞ্চলের ( ঢাকা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার এএমএম শাহনেওয়াজকে পূর্বাঞ্চলের (চট্টগ্রাম) চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের (চট্টগ্রাম)
চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামকে একই অঞ্চলের (চট্টগ্রাম) চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম) রেলওয়ের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক মো. বোরহান উদ্দিনকে একই অঞ্চলের( ঢাকা) উপ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের (ঢাকা) পরিচালক (প্রকৌশল) মো. গোলাম মোস্তফাকে একই অঞ্চলের পরিচালক (সংগ্রহ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. আহসান উল্লাহ ভূইয়াকে চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (রাজশাহী) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের( ঢাকা) পরিচালক (সংগ্রহ) মো. মনিরুল ইসলাম ফিরোজীকে প্রকল্প পরিচালক (বাংলাদেশ রেলওয়ে জয়দেবপুর–ঈশ্বরদী ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলের( ঢাকা) পরিচালক (এসএণ্ডপি) আবদুল্লাহ-আল-মাসুদকে উপ-প্রধান পরিকল্পনা (পরিকল্পনা কোষ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের( ঢাকা) পরিচালক (এলএম) তাপস কুমার দাসকে পশ্চিমাঞ্চলের (লালমনিরহাট) বিভাগীয় রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের( রাজশাহী) অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সেতু) মনির হোসেন চৌধুরীকে পূর্বাঞ্চলের হালিশহর) চিফ ট্রেনিং অফিসার মেকানিক্যাল (আরটিএ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. আসাদুল হককে একই অঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী) অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী সাদেকুর রহমানকে পূর্বাঞ্চলের (চট্টগ্রাম) বিভাগীয় ব্যবস্থাপক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের (চট্টগ্রাম) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) আতাউল হক ভূইয়াকে একই অঞ্চলের (ঢাকা) পরিচালক (প্রকৌশলী) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের (ঢাকা) উপ-প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা (পরিকল্পনা কোষ) মো. রফিকুল ইসলামকে একই অঞ্চলের পরিচালক (এলএম) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের (হালিশহর) সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার লিয়াকত শরীফ খানকে পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) প্রকৌশলী( সেতু) আহসান জাবিরকে পূর্বাঞ্চলের (চট্টগ্রাম) অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের (হালিশহর) চিফ ট্রেনিং অফিসার মেকানিক্যাল মোস্তফা জাকির হাসানকে একই অঞ্চলের (চট্টগ্রাম) অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
পূর্বাঞ্চলের (ঢাকা) ব্যবস্থাপক (ডিজেল) এবিএম কামরুজ্জামানকে একই অঞ্চলের পরিচালক (এসএন্ডপি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের( চট্টগ্রাম) সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমানকে পদোন্নতি দিয়ে একই অঞ্চলের অতিরিক্ত চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

জানা যায়, সাত মাস আগে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন এসএম মুরাদ হোসেন। অন্যদিকে একই সময়ে প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। যোগদানের পর থেকে তিনি অধিকাংশ সময় কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপরও তাকে প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

জানা গেছে, নাজমুল ইসলামের কার্যালয় সিআরবিতে হলেও বেশিরভাগ সময় তিনি ঢাকায় থাকতেন। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন তিনি। ফলে বর্তমান পদে বসে সঠিকভাবে কাজ করবেন কিনা তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!