রাজনীতিবিদরা ইতিহাসবিদ সেজে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে— খসরু

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের অস্থিরতায় রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতা সেখান থেকে জাতিকে রক্ষা করে। দেশে একদলীয় বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ফিরে আসে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা। দেশের রাজনীতিবিদরা এখন ইতিহাসবিদ সেজে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ তাদের মতো করে ইতিহাস রচনা করছে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের উদ্যোগে নগরীর কাজীর দেউড়িতে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ কোনো একক ব্যক্তির মাধ্যমে হয়নি। এখানে বিভিন্ন মানুষের অবদান আছে। বাংলাদেশের ফাউন্ডিং ফাদার হচ্ছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তাজউদ্দিন আহমদ, মাওলানা ভাসানী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকসহ আরো অনেকের অবদান আছে। আওয়ামী লীগের বানানো ইতিহাস দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। ইতোমধ্যে সত্যিকারের ইতিহাস বেরিয়ে আসছে। সারাবিশ্ব তা জানছে।

খসরু বলেন, পেঁয়াজ বাংলাদেশের গৃহিনীদের কাছে একটা অন্যতম উপাদান। এখন কেউ যদি বলে পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করতে হবে-তা কি মশকারি নয়! ডিমের দাম বাড়ছে বলে ডিম খাবেন না- তা কি হয়! জনগণের কাছে যাদের জবাবদিহিতা নেই, মানুষের কাছে যাদের ভোট চাইতে হয় না, তারাই এ ধরনের মশকারি করতে পারে।

ক্যাসিনো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ক্যাসিনো কি তা আগে কখনো জানতো না। এ সরকার জনগণকে ক্যাসিনো চিনিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজন সরকারি অনুমতি নিয়েই এসব করেছে। আসলে দেশে ক্যাসিনো বিরোধী কোনো অভিযানই চলছে না। এরা সবাই মাফিয়া। নিজেদের স্বার্থ ও দখলদারিত্ব রক্ষার্থে এসব অভিযান অভিযান খেলছে। দেশে নির্বাচিত ও জবাবদিহিতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই এসব বন্ধ হবে।

তিনি দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চট্টগ্রাম মহিলা দলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সভায় প্রধান বক্তা বেগম রোজী কবীর বলেন, শহীদ জিয়ার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশে একজন মহিলা রাষ্ট্রপতি হোক। তিনি মহিলা দলকে জাগাতে চেয়েছিলেন। চট্টগ্রামের মহিলা দলের বর্ণাঢ্য ইতিহাস আছে। আন্দোলন-সংগ্রামে মহিলা দল অগ্রণী ভূমিকা রাখে। গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে মহিলা দলকে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, আমরা আজ একত্রিত হয়েছি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। শহীদ জিয়া যুদ্ধ করে যে দেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সে দেশের মালিকানা এখন জনগণের হাতে নেই। মানুষের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে আজ বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। এ সরকারের কোনো ক্ষমতা নেই বেগম জিয়াকে মোকাবেলা করার। বিএনপি ফুলে-ফলে সুশোভিত একটি বটবৃক্ষ। সেজন্য আওয়ামী লীগ ঢিল মারছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে ৭ নভেম্বরের চেতনায় গর্জে উঠতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর মহিলাদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরীন খান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সহ-সভাপতি এম এ আজিজ, জাহিদুল করিম কচি, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু।

সিআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!