যৌন নিপীড়নের ঘটনা সুরাহার আশ্বাসে কাজে ফিরলেন কক্সবাজারের ইন্টার্ন ডাক্তাররা

সাংসদের আশ্বাস পেয়ে কক্সবাজারের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির নালিশ তুলে কর্মবিরতিতে যাওয়া ইন্টার্ন ডাক্তাররা একদিন পর কাজে ফিরেছেন। কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সঙ্গে বৈঠক শেষে দুপুর ১২টার দিকে ২৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন তারা। এর মধ্য দিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা একদিন পর স্বাভাবিক হয়েছে।

এর আগে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ছয়জন ইন্টার্ন নারী ডাক্তার যৌন হয়রানির অভিযোগে আনেন। ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে এমনকি রোগীর নারী স্বজনদেরও যৌন হয়রানি ও অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ডা. মাহফুজুর রহমানের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আসছিলেন রোগী ও রোগীর নারী স্বজনরা।

তবে অভিযোগ পাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীদের বেতন-ভাতা কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর প্রতিবাদে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন সদর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ শাখার সদস্যরা। ফলে ওইদিন সকাল থেকে কোনো ওয়ার্ডে ইন্টার্নরা আর কাজে যোগ দেননি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও এমপি সাইমুম শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এমপি তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় প্রত্যাহার করা হয় কর্মবিরতি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মীর ম ম বিল্লাহ তকী বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা দ্রুত আমাদের দাবিগুলো পূরণ করবেন। তাই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছি।’

এদিকে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডা. মাহফুজুর রহমানকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মমিনুর রহমান।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীসহ অশালীন আচরণের অভিযোগ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো ওই ছয় নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের তিন মাসের এক্সটেনশন ও বেতন-ভাতা কেটে রাখার আদেশ জারি করে কর্তৃপক্ষ। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কর্মবিরতি ঘোষণা করে ইন্টার্নরা।

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, ২৬ নভেম্বরের অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো ইন্টার্নদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ছয় ইন্টার্নের বিরুদ্ধে আদেশ জারি করে কর্তৃপক্ষ। অথচ অভিযুক্ত ডা. মাহফুজুর রহমান শুধু নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক নয়, রোগীর স্বজনদের সঙ্গেও এমন আচরণ করেন। যা লিখিত আকারে দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!