মাঝপথে শেষ অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেল নবজাতক

চিকিৎসকের অবহেলা

চিকিৎসকের অবহেলায় অকালেই ঝরে গেল সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক শিশুটি। ৫০ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে যাওয়ার পথেই ফুরিয়ে যায় জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন। ছটফট করতে করতে পথেই মারা গেল শিশুটি।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর এ অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির বাবা জয়েস চাকমা বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জীবতলী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।

জয়েস চাকমার পিতা রতন চাকমা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি আমার পুত্রবধূ মৈত্রি চাকমাকে। সেখানে চিকিৎসকের অবহেলা বুঝতে পেরে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিতে চাইলে কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসক বাধা দেন। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয়, তখন হাসপাতালে একজন নার্স ছাড়া কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে নবজাতকের জন্ম হয়।’

রতন চাকমা বলেন, ‘কিন্তু নবজাতকের শারীরিক অবস্থা গুরুতর ছিল। কিন্তু কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক দৌড়াদৌড়ি করে সহকারী আরএমও ডা. বিষ্ণুপদ দেবনাথকে পাওয়া গেলেও তখন অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে চলে যায়। পরে বাধ্য হয়ে রেফার করা হয় ৫০ কিলোমিটার দূরে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতকের মুখে দেওয়া হয় অক্সিজেন। কিন্তু কিছু দূর না যেতেই তা ফুরিয়ে যায়। অক্সিজেনের অভাবে একপর্যায়ে পথেই মারা গেল শিশুটি।’

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী আরএমও ডা. বিষ্ণুপদ দেব নাথের সাথে কথা হয় কেয়ার নামে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তিনি বলেন, ‘কোনও ডাক্তারই চায় না কেউ মারা যাক।’

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ পুরোপুরি সঠিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘তখন আমার ডিউটি ছিল না, আমি গাইনি বিশেষজ্ঞও না। কর্তব্যরত ডাক্তাররা তখন সন্ধ্যাকালীন নাস্তা করতে বাইরে ছিলেন। আর অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য ডাক্তার দায়ী নয়। তাছাড়া শিশুটির ঠান্ডাজনিত সমস্যা থাকায় খাগড়াছড়ি রেফার করা হয়েছিল।’

এদিকে নবজাতকের মৃত্যর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সবাই কর্তব্যরত ডাক্তারদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

জয়েস চাকমার বাবা রতন চাকমা বলেন, ‘এটি কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। আমি উপজেলা প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার চাই। আর যেন কোনও মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়। আমি এখন আমার পুত্রবধুকে নিয়ে চিন্তিত। সে কাল থেকে কারও সাথে কথা বলছে না, কিছু খাচ্ছেও না।’

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!