বিনা দোষে ৩ যুবক কারাগারে, সিএমপি জানে না আদালতের নির্দেশ

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৩ যুবককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ থাকলেও ১২ কার্যদিবসের পরও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি সিএমপি। তবে আদালতের দেওয়া ওই আদেশের বিষয়ে কিছু জানেন না বলেও জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান।

অন্যদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) আবারও আদেশ দিয়েছেন আদালত। সিএমপির প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে শুনানির জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছে জিকু দাশ ও শোয়েবের জামিন আবেদন।

৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই আদেশ দিয়েছিলেন। ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৩ যুবকের দু’জনকে গ্রেপ্তারের সময় ও আদেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠায় তাদের জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। সে সময় সিএমপির প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে জিকু দাশ ও শোয়েবের জামিন আবেদনের শুনানি অপেক্ষমান রাখা হয়। এই আদেশ দেওয়ার পর ১২ কার্যদিবস পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে আদালতে কোন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি সিএমপি।

এদিকে সিএমপির প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় ঝুলে আছে জিকু দাশ ও শোয়েবের জামিন আবেদনের শুনানি।

এ বিষয়ে জিকু দাশের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট খাইরুল আমিনের আদালত অতিসত্ত্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সিএমপিকে আবারও আদেশ দিয়েছেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই আদেশ দেন।

তবে সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামান এই আদেশের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। এমনকি ৩১ ডিসেম্বর দেওয়া আদালতের আদেশের বিষয়ে সিএমপির পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা এ বিষয়েও তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সিএমপির কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনও তথ্য নেই। আপনারা বরং ডিসি লেভেলে যোগাযোগ করুন।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় জিকু চন্দ্র দাশ, শোয়েব ও সাজ্জাত নামের তিন যুবককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রোববার (২২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন টাইগারপাস রেলওয়ে পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় বন্দুক, একটি কার্তুজ, একটি ফোল্ডিং ছুরি ও একটি চাপাতিসহ তাদের গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।

পরে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ভিন্ন তথ্য। ঘটনার তিন দিন আগে ২০ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় মুরাদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শোয়েবকে। সেই সংবাদের সূত্র ধরে আরও একটি ভিডিও ফুটেজ চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে আসে। যেখানে দেখা যায় মামলার প্রধান আসামি জিকু দাশকেও ভিন্ন জায়গা থেকে ভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করেছে তারা। ওই সময় তাদের কাছ থেকে কোনো অস্ত্রও পাওয়া যায়নি।

ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৩ যুবকের দুজনের গ্রেপ্তারের সময় ও স্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠায় ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সিএমপি কমিশনারকে আদেশ দেন আদালত।

এআরটি/এসএ/এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!