বাংলাদেশের সামনে ১৩৯ রানের লক্ষ্য রাখলো আফগানিস্তান

টসে জিতে বোলিং করতে এসে ইনিংসের প্রথম বলেই আফগানিস্তানকে নো বল দিয়ে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। যদিও ফ্রি হিট থেকে একরানের বেশি নিতে পারেননি আফগানিস্তানের রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। প্রথম ওভারটি রয়েসয়ে খেলে পার করে দেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার। নিজের প্রথম ওভারে শফিউলকে উইকেট বঞ্চিত করেছেন মাহমুদুল্লাহ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বল, ব্যাটসম্যানকে পরাস্ত করতে শর্ট বল করেছিলেন শফিউল। যাতে করে ব্যাটসম্যান খেলতে গেলে মিস টাইমিংয়ের শিকার হয়। হয়েছিলও তাই। গুরবাজের মিস টাইমিং হয়ে বল আকাশে, শর্ট থার্ডম্যানে দাঁড়ানো মাহমুদুল্লাহ তালুবন্দি করতে পারেননি সহজ বলটি। তখন আফগানিস্তানের দলীয় সংগ্রহ ৮ রান।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সর্বমোট সাতটি উইকেট। এর মধ্যে এক নম্বর এবং সাত নম্বর উইকেট দুটি অপেক্ষাকৃত রান কম উঠায় এ দুই উইকেটে কখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করা হয় না। শুধুমাত্র ঘরোয়া ক্রিকেটের কিছু ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এই দুটি উইকেটে। তাও খুব বেশি রান উঠতে দেখা যায়নি। অনেকটা বোলাররা সুবিধে বেশি পায়, বিশেষকরে পেস বোলাররা। শনিবার সাত নম্বর উইকেটটিতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ দলে তিন পেসার নিয়ে। ইনিংসের প্রথম তিন ওভার অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে বল করেন সাইফউদ্দিন ও শফিউল। কিন্তু চতুর্থ ওভারে এসে হাত খুলে খেলতে শুরু করে আফগানিস্তান। শফিউলের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ৩ বাউন্ডারিসহ ১৩ রান তুলে নেয় তারা।

এরপর তারা তরতর করে এগিয়ে যায়। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ছয় ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৯.৩ ওভার পর্যন্ত। ততক্ষণে আফগানদের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৭৫ রানে। প্রথম উইকেট দেখার পর জেগে উঠে বাংলাদেশের বোলাররা। আর তাই শেষ পর্যন্ত ১৩৮ রানেই থেমে যায় আফগানদের দৌড়।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন রহমানুল্লাহ ও জাজাই। ছবি: আজীম অনন।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন রহমানুল্লাহ ও জাজাই। ছবি: আজীম অনন।

দলীয় ৭৫ রানের মাথায় বিদায় নেন হজরতউল্লাহ জাজাই। ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবারের মতো সাকিব বোলিং আক্রমণে আনেন আফিফ হোসেনকে। নিজের প্রথম ওভারেই জাজাইকে বিদায় করেন তিনি। আউট হওয়ার আগে জাজাই ৩৫ বলে ছয়টি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ৪৭ রান। একই ওভারে আফিফ ফেরান আসগর আফগানকে। নিজের প্রথম ওভারে কোনো রান না দিয়েই আফিফ নেন জোড়া উইকেট। ইনিংসের দশম ওভারে আফিফ জোড়া আঘাত হানার পরের ওভারে আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। তার কাটার বুঝতে না পেরে লিডিং এজে ফেরেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। তার আগে ২৭ বলে দুই চার, ‍দুই ছক্কায় করেন ২৯ রান। ৬ বলে ৪ রান করা মোহাম্মদ নবীকে বিদায় করেন সাকিব।

দলীয় ৮৮ রানের মাথায় আফগানরা চতুর্থ উইকেট হারায়। দলীয় ৯৬ রানের মাথায় রানআউট হন  ১ রান করা গুলবাদিন নাইব।ইনিংসের ১৬তম ওভারে আক্রমণে এসে সাইফউদ্দিন দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন ১৬ বলে এক ছক্কায় ১৪ রান করা নাজিবুল্লাহ জাদরানকে। দলীয় ১১৪ রানের মাথায় শফিউল ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোস্তাফিজের হাতে ধরা পড়েন ৪ বলে ৩ রান করা করিম জানাত। শফিকুল্লাহ ১৭ বলে ২৩ এবং রশিদ খান ১৩ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন।

সাকিব ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে তুলে নেন একটি উইকেট। মাহমুদউল্লাহ ১ ওভারে ১৬ আর মোসাদ্দেক ১০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। আফিফের বোলিং ফিগার ৩-১-৯-২। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ২৩ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। শফিউল ইসলাম ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। মোস্তাফিজ ৩ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে তুলে নেন একটি উইকেট।

এখন দেখার বিষয় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মিরপুরে ফাইনালে রশিদ খানের আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়ার আগে জয় পায় কিনা বাংলাদেশ?

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!