প্রায় সাড়ে ১৭ বছর পর কার্যকর হতে চলেছে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী আমবাগানের বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন হত্যার রায়। আগামী ৮ মার্চের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করা হবে জানিয়ে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির স্বজনদের চিঠি দিয়েছে কুমিল্লা কারাগার কর্তৃপক্ষ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার নন্দনসার গ্রামের মৃত ইউনুসের ছেলে শিপন হাওলাদার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মৃত ইদন মিয়ার ছেলে নাঈমুল ইসলাম ইমন।
জানা যায়, ২০০৩ সালে খুলশী আমবাগান এলাকায় বাসার সামনে গুলি করে খুন করা হয় বিএনপি নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিনকে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় শিপন, ইমন, হেলাল ওরফে জিএস হেলালসহ সন্ত্রাসীরা নৃশংসভাবে খুন করেন তাকে। ওই সময় রক্তমাখা শার্ট গায়ে অস্ত্রসহ ধরা পড়েন শিপন হাওলাদার।
২০০৪ সালের শেষদিকে চট্টগ্রাম আদালতের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আসামির শিপন ও ইমনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া হেলাল, ফরহাদ ও মারুফ শিকদারকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. হোসেন হিরণ এবং তার ছেলেসহ ছয়জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফরহাদ, মারুফ শিকদার সাজা ভোগ করে কারাগার থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। তবে হেলাল ওরফে জিএস হেলাল এখনও চট্টগ্রাম রেলে টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।
কুমিল্লা কারাগার সূত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি শিপন হাওলাদার ও নাঈমুল ইসলাম ইমনের জন্য ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে গত ২ মার্চ কুমিল্লা কারাগারের জেল সুপার শাহাজাহান আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির পরিবারকে। চিঠিতে আগামী ৮ মার্চের মধ্যে পরিবারের সদস্য কিংবা স্বজনদের সশরীরে শেষ সাক্ষাত করে যেতে বলা হয়েছে।
চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে ইমনের ভগ্নিপতি তকদির চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ইমনের মা ও বাবা মারা গেছেন। তার দুই ভাই ও বোন আছে। তারা শিগগিরই কুমিল্লা কারাগারে ইমনের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করবে।
শফি উদ্দিনের স্ত্রী মাসুদা বেগম (৭০) বলেন, দুইজনের ফাঁসির রায় কার্যকর হবে—এমন কথা আমিও শুনেছি। আশাকরি ফাঁসি কার্যকরের মধ্যদিয়ে আমার স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার পাবো।
কুমিল্লা কারাগারের সুপার শাহজাহান আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সামাজিক কারণে শিপন ও ইমনের পরিবারের তথ্য আমরা প্রকাশ করছি না। তবে জানামতে কয়েকদিনের মধ্যেই এদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা।
ডিজে