প্রদীপের সঙ্গে মিশেই লিয়াকতের এই পরিণতি— বলছেন নিজ গ্রামের বাসিন্দারা

মেজর (অব.) সিনহা হত্যায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া প্রধান আসামি বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর গ্রামের বাড়ি পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের হুলাইনে। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সেমিপাকা সেই বাড়িটির বাইরে বিমর্ষভাবে বসে থাকতে দেখা গেল বড় ভাই হায়দার আলীকে। সাংবাদিক পরিচয় পেতেই এগিয়ে এসে ঘরের ভেতরে নিয়ে গেলেন। এ সময় সেখানে আরও ছিলেন লিয়াকত আলীর ভাবী, একমাত্র বোন ও দুলাভাই। সারা বাড়ি জুড়ে সুনসান নীরবতা।

২০১৯ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান লিয়াকত আলী। এরপর তিনি কক্সবাজার জেলা পুলিশে যোগদান করেন।
২০১৯ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান লিয়াকত আলী। এরপর তিনি কক্সবাজার জেলা পুলিশে যোগদান করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত লিয়াকত আলীর বড় ভাই হায়দার আলী বললেন, ‘আমার ভাইয়ের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবীরা ১৬৪ ধারার সাজানো জবানবন্দিতে বক্তব্য দিয়ে চার্জশিট দাখিল করেছেন। স্বাভাবিকভাবে একজন অপরাধী যখন তার দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দেয় আইন অনুযায়ী সেই অপরাধীর জবানবন্দি দেওয়ার কথা।’

কিন্তু লিয়াকতের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি দাবি করে হায়দার বলেন, তার ভাই লিয়াকত আলীকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে অণ্ডকোষে ইনজেকশন পুশ, ইলেকট্রিক শক দিয়ে জোরপূর্বক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

লিয়াকত আলীর গুলিতেই মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যু হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে হায়দার আলী বলেন, ‘মেজর (অব.) সিনহা যে লিয়াকতের গুলিতে মারা গেছে তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। এ মামলায় মাসে ২-৩ বার শুনানি করা হতো। মাসে এতবার শুনানি তো নজিরবিহীন।’

হায়দার আলী বলেন, ‘যে সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে এপিবিএনের সাব-ইন্সপেক্টর শাহজাহান, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও রাজিব হোসেন তো ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তারা কিভাবে খালাস পেলেন?’

হায়দার আলী পুলিশের (পিআরবি) ১৫৩ ও ১৫৪ ধারা উল্লেখ করে বলেন, এসব ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে কোন পুলিশ সদস্য তার আত্মরক্ষা অধিকারের ক্ষেত্রে সিভিলে যে কোন লোক অস্ত্র হাতে নিয়ে চলাফেরা কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাহলে পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালাতে পারবে।

তারা আরও বলেন, আমরা এ মামলায় আমাদের ভাইয়ের সর্বোচ্চ জেল জরিমানা হবে মনে করেছিলাম। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেওয়াতে আমরা হতবাক।

লিয়াকত আলীর গ্রামের বাড়ি হুলাইন গ্রামের নুর নবী সওদাগর বলেন, লিয়াকতের বাবা এ এলাকায় ঘর জামাই ছিলেন। তার বাবার নিজ বাড়ি সাতকানিয়ায়। তার বাবা ছিলেন ড্রাইভার আর মা খুব কষ্ট করে তাদের সব ভাইকে পড়াশোনা করিয়াছেন। কেন সে এ ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়েছে পুলিশের পেশায় থেকে— তা বুঝতে পারছি না।

বয়োবৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার আবদুল হালিম বলেন, পুলিশের চাকরি হওয়ার আগে ২০০৯ সালে লিয়াকতের পোস্টমাস্টার পদে চাকরি হয়। চকরিয়া উপজেলায় ২-৩ মাস চাকরি করার পর পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে চাকরি হওয়ার পর সে পুলিশে যোগ দেয়। যখন তার পোস্ট অফিসে চাকরি হয়, তখন যোগদানের আগে আমার কাছে এসে জানতে চায়, পোস্টমাস্টার পদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে। ওই সময় আমি লিয়াকতকে বলি এ পদে থেকে বড়জোর সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদ পর্যন্ত যাওয়া যাবে। তখন সে আমাকে বলে আমার আরও একটি চাকরির আশা আছে পুলিশের উপ-পরিদর্শক পদে। পরে পুলিশে চাকরির পর এলাকায় তার তেমন একটা আসা-যাওয়া তাদের চোখে পড়তো না।

আবার একই এলাকার লিটন, আজাদ ও খোকন বলেন, লিয়াকতদের পরিবারের সবাই শিক্ষিত। বড় ভাইরাও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু লিয়াকত যে অপরাধ করছেন, তার শাস্তি পেয়েছেন— এটাই স্বাভাবিক। অপরাধীর শাস্তি আমরা এলাকাবাসীও চাই। তার জন্য আজ গোটা দেশে পটিয়ার হুলাইন গ্রামটা কলঙ্কিত।

এদিকে স্কুল ও কলেজে লিয়াকতের সহপাঠী ওয়াকার উদ্দিন মুহাম্মদ তারেক ও মুবিনুল ইসলাম সুমন বলেন, লিয়াকত পড়াশোনায় মেধাবী ছাত্র ছিলেন। আমরা একসাথে বড় হয়েছি। পুলিশের চাকরিতে প্রবেশ করে কেন এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো নাকি ওসি প্রদীপের ফাঁদে পড়ে লিয়াকতের এমন পরিণতি হয়েছে তা আমাদের বুঝে আসছে না।

তবে দুই বন্ধুই দাবি করলেন, ওসি প্রদীপের ফাঁদে পা বাড়িয়েই লিয়াকতের এই পরিণতি। আমাদের ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।

পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের পূর্ব হুলাইন গ্রামে লিয়াকতের বাড়ি। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিয়াকত সবার ছোট। ওই গ্রামের মৃত মো. সাহাব মিয়ার ছেলে লিয়াকত ২০১০ সালে পুলিশের উপ-পরিদর্শক পদে যোগ দেন। লিয়াকত প্রথমে ডিবি, পরে সোয়াট ও অ্যান্টি টেরিরিজম ইউনিটে কাজ করেন। মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ডের দুই বছর আগে পুলিশ পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান এবং ঘটনার এক বছর আগে টেকনাফ থানার বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে যোগ দেন লিয়াকত আলী।

সিনহা মো. রাশেদ হত্যার ঘটনায় অভিযোগপত্রের ১৩ পাতায় তৃতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়, মেজর (অব.) সিনহার গাড়িটি ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করে। এরপর রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে গাড়িটি শামলাপুর চেকপোস্টে পৌঁছালে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্য রাজীব গাড়িটি থামার সংকেত দিলে তারা গাড়িটি থামান। তখন রাজীব পরিচয় জানতে চাইলে গাড়ির বাঁ পাশের আসনে বসা সিফাত গাড়ির জানালা খুলে দেন। এ সময় ড্রাইভিং সিটে বসা সিনহা মো. রাশেদ নিজের পরিচয় দেন। তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর রাজীব এবং অন্য দুজন সদস্য এসআই শাহজাহান আলী ও আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে ইমন স্যালুট দিয়ে গাড়িটিকে চলে যাওয়ার সংকেত দেন।

সিনহা তখন গাড়িটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। হঠাৎ সিনহার নাম শুনেই মো. লিয়াকত আলী চিৎকার করে গাড়িটির সামনে চলে যান এবং আবার তাদের পরিচয় জানতে চান। পুনরায় মেজর (অব.) সিনহা নিজের পরিচয় দেন। তখন লিয়াকত আলী উত্তেজিত হয়ে লাফ দিয়ে সামনে গিয়ে আবার ব্যারিকেড তুলে রাস্তা বন্ধ করে দেন। এ কাজে এসআই নন্দদুলালও সহযোগিতা করেন। এরপর লিয়াকত আলী পিস্তল তাক করে অত্যন্ত উত্তেজিতভাবে সিনহা মো. রাশেদকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং গাড়ির সব যাত্রীকে দুহাত ওপরে তুলে নেমে আসতে বলেন। হঠাৎ তার চিৎকারে রাস্তার দুই পাশে চলাচল করতে থাকা লোকজনও হকচকিত হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে কী হচ্ছে, তা দেখার জন্য পথচারীরা দাঁড়িয়ে যান। এই চেকপোস্টটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সেখানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার লাইট দিয়ে আলোকিত করা ছিল এবং এতে আশপাশের মসজিদ, বাজার ও রাস্তায় চলাচলকারী লোকজন পরিষ্কারভাবে সব কিছু দেখতে পেত।

অভিযোগপত্রের ১৪ পাতার প্রথম অনুচ্ছেদে হত্যাকাণ্ডের বর্ণণা দিয়ে বলা হয়, ওই সময় লিয়াকত আলী উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে কথা বলছিলেন। তখন গাড়ির ২ নম্বর আসনে বসা সাহেদুল ইসলাম সিফাত দুহাত উঁচু করে গাড়ি থেকে নামেন। ড্রাইভিং সিটে বসা মেজর (অব.) সিনহাও দুহাত উঁচু করে নেমে ইংরেজিতে কামডাউন, কামডাউন বলেন এবং লিয়াকত আলীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

লিয়াকত আলী মেজর (অব.) সিনহার পরিচয় জেনে তার কোনো কথা না শুনে এবং কোনো ধরনের সময় না দিয়ে তাকে লক্ষ্য করে প্রথমে দুই রাউন্ড গুলি করেন এবং কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে আরও দুই রাউন্ড গুলি করেন। এতে সিনহা মো. রাশেদ রাস্তায় পড়ে যান। গুলি করার পর লিয়াকত আলী মেজর (অব.) সিনহা ও সিফাতকে হাতকড়া পড়ানোর নির্দেশ দেন। তখন এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত আহত সিনহাকে হাতকড়া পরান। কিন্তু, এসআই মো. শাহাজাহান আলীর কাছে হাতকড়া না থাকায় লিয়াকত তাকে গালমন্দ করেন এবং রশি এনে সিফাতকে বাঁধতে বলেন। তখন কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে ইমন পাশের শামলাপুর বাজারের দোকান থেকে রশি এনে এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল রাজিবের সহযোগিতায় সিফাতকে রশি দিয়ে বাঁধেন।

ঘটনার পর লিয়াকত আলী মোবাইল ফোনে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গে এক মিনিট ১৯ সেকেন্ড কথা বলেন এবং তিনি ওসি প্রদীপকে ঘটনাটি জানান। এর কিছুক্ষণ পর রাত ৯টা ৩৩ মিনিটে লিয়াকত আলী ঘটনাটি কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে (এসপি) জানান। সিনহা মো. রাশেদ তখনও জীবিত ও সজাগ ছিলেন এবং ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে সিনহা একটু পানি খাওয়ার জন্য আকুতি-মিনতি করেন। এটা শুনে এবং তাকে তখনও জীবিত অবস্থায় দেখে লিয়াকত আলী আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি সিনহাকে বলেন, তোকে গুলি করেছি কি পানি খাওয়ানোর জন্য? এরপর লিয়াকত আহত সিনহার কাছে যান এবং বুকের বাঁ পাশে জোরে কয়েকটি লাথি মারেন এবং পা দিয়ে বুক চেপে ধরেন। এরমধ্যে এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রে ফোন করে শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে কিছু পুলিশ পাঠাতে বলেন।

নন্দ দুলাল রক্ষিতের ফোন পেয়ে তদন্ত কেন্দ্র থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এএসআই লিটন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন, ছাফানুল করিম ও কামাল হোসেন আজাদ সিএনজিতে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর লিয়াকত আলী এপিবিএন সদস্য এসআই লিটন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন, কামাল হোসেন আজাদ ও ছাফানুল করিমকে সিনহা মো. রাশেদের গাড়িটি তল্লাশি করতে বলেন। তারা গাড়ির ভেতরে সামনের দুই সিটের মাঝখান থেকে একটি অস্ত্র, ড্যাসবোর্ডে কিছু কাগজপত্র, ক্যামেরা, সিডিবক্স ও ভিডিও করার যন্ত্রপাতি পান। তখন সেখানে কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। পুরো ঘটনাটি রাস্তার দুপাশে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী, পথচারী, মসজিদ, বাজার ও জেলেঘাটের লোকজন চেকপোস্টের পরিষ্কার আলোয় প্রত্যক্ষ করেন। সেদিন চাঁদ রাত হওয়ায় সেখানে লোক সমাগমও বেশি ছিল।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, লিয়াকত আলীর ফোন পেয়ে ওসি প্রদীপ একটি সাদা মাইক্রোবাস এবং একটি পিকআপভ্যানে তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ দ্রুতগতিতে রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর প্রদীপ ও লিয়াকত আলী একান্তে কিছু সময় আলাপ করেন। তারপর প্রদীপ গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকা সিনহার কাছে যান। তখন প্রদীপ দম্ভোক্তি করে বলেন, অনেক টার্গেট নেওয়ার পর কুত্তার বাচ্চারে শেষ করতে পারছি। তারপর প্রদীপ প্রথমে সিনহাকে পা দিয়ে নাড়াচাড়া করে দেখেন। সিনহা তখনও জীবিত ছিলেন এবং পানি চাচ্ছিলেন। প্রদীপ তখন তার পায়ের জুতা দিয়ে সিনহার গলা চেপে ধরেন এবং এক পর্যায়ে সিনহার শরীরের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। তখনও প্রদীপ, লিয়াকত এবং সঙ্গীয় ফোর্সের কেউই সিনহার পড়ে থাকা দেহটিকে হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ না নিয়ে ঘটনাস্থলে ফেলে রাখেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ওসি প্রদীপ তার সঙ্গীয় ফোর্সের মাধ্যমে মেজর (অব.) সিনহার গাড়িটি পুনরায় তল্লাশি করে মাদক খুঁজে বের করতে বলেন। তার সঙ্গে আসা টেকনাফ থানার সাগর দেব ও রুবেল শর্মা নিজেদের বহনকারী মাইক্রোবাসের দিকে যান এবং এর কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে চিৎকার করে বলেন, সিনহার গাড়ির ভেতর মাদক পাওয়া গেছে।

এরপর ওসি প্রদীপের নির্দেশে তার সঙ্গীয় ফোর্স সিনহার সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের হাত বেঁধে চেকপোস্টের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তারা তার মুখের ওপর পানি ঢেলে অবর্ণনীয় কায়দায় নির্যাতন করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময়ের সব ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সিনহা মো. রাশেদকে হাসপাতালে নেওয়ার কাজটি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রায় সোয়া ঘণ্টা বিলম্ব করা হয়েছে। সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই ওসি প্রদীপ ও লিয়াকত আলী অস্বাভাবিক দেরিতে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। পরে এএসআই লিটন, কনস্টেবল কামাল হোসেন আজাদ ও সাফানুল করিম মেজর (অব.) সিনহাকে একটি পিকআপে তুলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিনহাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!