প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলার সাতদিন পর মারা গেলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী

চট্টগ্রামের পটিয়ার জিরি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদনগর এলাকায় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় মো. বেলাল উদ্দিন (৪০) নামে একজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গুরুতর আহত হওয়ার ৭ দিন পর মারা গেছেন।

শুক্রবার (১২ জুন) ভোর ৬টার দিকে হাসপাতলে চিকিৎসাধীন দিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত বেলাল উদ্দিন ওই এলাকার মরহুম নুর আহমদের দ্বিতীয় পুত্র।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বেলাল গত ৫ মাস আগে দেশে আসেন। জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ৬ জুন সন্ধ্যায় মোহাম্মদনগর এলাকায় তার বাড়ির সামনে সন্ত্রাসি আবদুর রউফ ভুট্টো তার সহযোগীদের নিয়ে বেলালের উপর লোহার রড ও ইট দিয়ে আঘাত করে। হামলায় গুরুতর আহত বেলালকে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা সেবা দিতে থাকে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে সন্ত্রাসি ভুট্টো তার লোকজন দিয়ে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। তখন তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইসিইউ খালি না থাকায় ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। এরপর দিনভর বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। রাতে চট্টগ্রামের ফিল্ড হাসপাতাল নেওয়ার পথেই ভোর ৬টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বেলাল।

জানা যায়, ইয়াবা, হত্যা, অস্ত্র, মাদক ব্যবসা ও জায়গা দখলের ১৭ মামলার আসামি সন্ত্রাসি আব্দুর রউফ ভুট্টো আমেরিকা প্রবাসীর গেইটে তালা লাগিয়ে দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত শনিবার (৬ জুন) আব্দুর রউফ ভুট্টো ও তার সহযোগী মহিউদ্দিনসহ আরও বেশ কয়েকজন লোহার রড ও ইট দিয়ে বেলালকে আঘাত করে।

এছাড়াও ভুট্টোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে- সে চুক্তিভিত্তিক ঝামেলাপূর্ণ জায়গা দখল বাণিজ্যে জড়িত। সময়ের যুবদলের দুর্ধর্ষ ক্যাডার সরকার পরির্বতনের পর প্রাণ বাঁচাতে রাতারাতি দল পাল্টিয়ে বনে যান আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। এরপর তার পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। এলাকায় ইয়াবা, মাটি, বালি ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম করে সে হয়ে যান মস্তবড় নেতা। মোহাম্মদ নগরের ফকির মোহাম্মদ বাড়ির নয়ন ওরফে সুমন হত্যার প্রধান আসামি এই ভুট্টো। তাকে শেল্টার দিচ্ছেন বেসরকারি কারা পরির্দশক আবদুল হান্নান লিটন। তার এ দৌরাত্ম্যে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে কারা পরির্দশক আবদুল হান্নান লিটন জানান, আমি বেলালকে ছিনি না। সে কিছু দিন আগে আমাকে ফোন দিয়ে জানায় তার কিছু জায়গা সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা আছে। এসবের মিমাংসা করতে আমার সহায়তা চায়। আমি তাকে ছিনিনা জানিনা বলে আমি সংযোগটি কেটে দিই। এরপর আমি আর কিছু জানিনা।

নিহতের বড় ভাই মো. সাইফুল ইসলাম জানান, অতর্কিতভাবে তার প্রবাসী ভাইয়ের উপর সন্ত্রাসি ভুট্টো হামলা চালিয়েছে। হামলার পরদিন আমরা পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে অভিযোগটি তদন্ত করেও দেখেনি পুলিশ। এ মুহূর্তে আমি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করার জন্য এজহার রেডি করছি।

এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, জায়গা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনায় লিখিত অভিযোগটি কালারপুল পুলিশ ফাঁড়ির কর্তব্যরত অফিসারকে তদন্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কেন তিনি তদন্ত করেননি তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিহতের বড় ভাই বাদি হয়ে চারজনকে আসামি করে একটা হত্যা মামলা রুজু করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!