আনসার-ভিডিপি প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ

পেকুয়া উপজেলা আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলার ২৯ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য গত ২০ এপ্রিল আনসার ভিডিপি সদর দপ্তরের উপপরিচালকের (মনিটরিং) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ৮ জুন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলা আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ তদন্তে গত ৮ জুন কক্সবাজার জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের মনিটরিং অফিসার পেকুয়ায় এসে সরেজমিনে তদন্ত কাজ শুরু করেন। এসময় শিলখালী ইউনিয়নের সিকদারঘোনার বাসিন্দা আনসার সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ছৈয়দ নূর, রাজাখালী ইউনিয়নের আমিলাপাড়ার বাসিন্দা আনসার ও ভিডিপি সদস্য মো. ফরিদুল আলম, বারবাকিয়া ইউনিয়নের বুধামাঝির ঘোনা এলাকার বাসিন্দা আনসার ও ভিডিপি সদস্য মো. সেকান্দর আলী লিখিত জবানবন্দি দেন।

লিখিত জবানবন্দিতে সেকান্দর আলী বলেন, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২ জুন পরীক্ষা শেষে উপজেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ে গেলে পরীক্ষায় দায়িত্বপালনকারী আমরা চারজনের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ইউএনওকে বিষয়টি অবহিত করে তাঁর কাছ থেকেই দায়িত্ব পালনের টাকা গ্রহণ করি। এরপর থেকে আমার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার শুরু করেন উপজেলা প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর।

লিখিত বক্তব্যে ফরিদুল আলম দাবি করেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবের কারণে সরকার আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য ত্রাণ বরাদ্ধ দেন। এই ত্রাণের জন্য নাম তালিকাভূক্তি করতে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে দাবি করেন উপজেলা প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম। টাকা না দিলে অনেক খারাপ ও কটুক্তিমূলক আচরণ শুরু করেন তিনি। এমনকী উপজেলা কার্যালয়ে যেতে বারণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা ছৈয়দ নূর বলেন, জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা কার্যালয়ে যোগদানের পর থেকে খারাপ আচরণ ও অবমূল্যায়ন শুরু করেন। কোনও রাষ্ট্রীয় কাজে দায়িত্ব পালন করতে চাইলে দায়িত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানান। প্রতিটি দায়িত্বের বিপরীতে টাকা দাবি করেন তিনি।

কয়েকজন ইউনিয়ন ভিডিপি লিডার বলেন, তারা তিন মাসে বেতন পান সাড়ে ৭ হাজার টাকা। বেতন নিতে গেলেই ৫০০-১০০০ টাকা দাবি করে বসেন আনসার ভিডিপির উপজেলা প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম।

আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা বলেন, উপজেলা প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি পাশের কুতুবদিয়া উপজেলায়। স্থানীয় হওয়ায় তিনি সবসময় দাপট দেখিয়ে কথা বলেন। কোনও অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এছাড়া তিনি মাসের বেশিরভাগ সময় কুতুবদিয়ায় বাড়িতে থেকে যান। তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের প্রশিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ত্রাণের তালিকা করেছেন ইউনিয়ন ভিডিপি লিডাররা। সেখানে আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই। জেএসসি’র দায়িত্ব পালনকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টার বিষয়টিও সত্য নয়।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!