পরিবেশ ছাড়পত্রের তোয়াক্কা করে না চসিক-সিডিএ-ওয়াসা

‘আইনের বাধ্যবাধকতা থাকার পরও উন্নয়ন প্রকল্পে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও চট্টগ্রাম ওয়াসা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয় না। ফলে এসব সংস্থার উন্নয়ন কাজে পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে বায়ু দূষণ হয়ে থাকে।’ সোমবার (২৭ মে) বিকালে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৯ উপলক্ষে ‘বায়ু দূষণ’ শীর্ষক মত বিনিময়কালে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক সাংবাদিকদেরকে এসব কথা বলেন।

খুলশী জাকির হোসেন রোডের পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের কার্যালয়ের হালদা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে আজাদুর রহমান আরো বলেন, ‘রাস্তা খোঁড়াখুড়ি করে ওয়াসা যেভাবে বায়ু দূষণ করছে, এর দিকে নজর দেওয়া দরকার। উন্নয়ন প্রকল্পে সিটি করপোরেশন, ওয়াসা ও সিডিএ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কখনো নেয়; আবার কখনো নেয় না। এ সংস্থার প্রকল্পে বায়ূ দূষণসহ পরিবেশ দূষণের কোন কিছু যাতে না থাকে, সে জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।’

আজাদুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীতে যে পরিমাণ বায়ূ দূষণ হয়ে থাকে, তার মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র শূন্য দশমিক ৩৫ ভাগ দায়ী। বলা হচ্ছে, ২০২১ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বেড়ে যাবে, এ ধারণা এখন দুই মিটার করা হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় পরিবেশ দূষণ ৪ শতাংশ কমিয়ে আনবে বাংলাদেশ। দাতা সংস্থাসমূহের সহযোগিতা পেলে ১০ শতাংশ পরিবেশ দূষণ কমাবে বাংলাদেশ।’

শিল্প কারখানার বর্জ্য, যানবাহনের ধোঁয়া, উন্নয়ন কর্মকান্ডের ধূলিকণা বেশি পরিমাণে পরিবেশ দূষণ করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চট্টগ্রাম মহানগরে চলাচলরত যানবাহনসমূহের ৩৫ শতাংশের ফিটনেস সাটিফিকেট নেই জানিয়ে আজাদুর রহমান বলেন, ‘দ্রুত গাড়িগুলোকে রাস্তা থেকে সরানোর ব্যবস্থা করা হোক। আগামী মাস থেকে কালো ধোঁয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান চালাবে পরিবেশ অধিদপ্তর।’

জিইসি মোড়ের জিইসি কনভেনশন সেন্টারের পশ্চিম পাশে বার্মা হাজির পাহাড়কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বেশ কৌশলে তারা পাহাড় কাটছে। এর ফলে বৃষ্টি হলে ড্রেন বন্ধ হয়ে যায়। কাদায় রাস্তা ছেয়ে যায়। বেশ কয়েকবার তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। কিছু জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কিছু আপিল আছে। যথাযথ প্রমাণ পেলে আমরা অ্যাকশনে যেতে পারি।’

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তার সঞ্চালনায় মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম গবেষণাগারের পরিচালক মো. নুরুল্লা নূরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দরের জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. কামরুল হাসান, বায়েজিদ থানার পুলিশ কর্মকর্তা পরিত্রাণ তালুকদার, চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ হাসান রেজা, বনায়ন ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন আলী চৌধুরী প্রমুখ।

‘বায়ু দূষণ ও এ সম্পর্কে করণীয়’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম গবেষণাগারের উপ-পরিচালক মো. জমির উদ্দীন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!