নির্বাচনী বোর্ডের গোপন তথ্য ফাঁস করলেন চবি শিক্ষক, তদন্তে সিন্ডিকেট কমিটি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের সভাপতি শাসনানন্দ বড়ুয়া রুপনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত গোপনীয় তথ্য ফাঁসের অভিযোগ তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী এ ঘটনা তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) ৫৪৪ তম সিন্ডিকেটের ৩২ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।

কমিটিতে আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুককে আহবায়ক, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. হেলাল উদ্দিনকে সদস্য করা হয়। এছাড়া সদস্য সচিব করা হয় সহকারী প্রক্টর হাসান মূহাম্মদ রোমানকে।

চবি রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৫৪৪ তম সভার ৩২ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে সিন্ডিকেটের দেওয়া ক্ষমতাবলে উপাচার্য এ কমিটি গঠন করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে.এম. নুর আহমদ কমিটি গঠনের বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, পালি বিভাগে সম্প্রতি প্রভাষক নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্তের নথি সিলগালা হওয়ার পর সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপিত হওয়ার কথা।

পালি বিভাগের সভাপতি হিসেবে পদাধিকারবলে এই নিয়োগ বোর্ডের সদস্য শাসনানন্দ বড়ুয়া রুপনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগ, নিয়োগ বোর্ডের সভার সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে উত্থাপিত হওয়ার আগেই তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী বোর্ডের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়েছে।

গত ১৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৪ তম সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে গোপনীয় তথ্য ফাঁস ও অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী তদন্তের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এ বিষয়ে বলেন, নির্বাচনী বোর্ডের সভা শেষে সদস্যদের প্রকাশ্যে সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে কোথাও মন্তব্যের সুযোগ নেই। কারণ এ সভার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিবে সিন্ডিকেট। তার আগপর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত গোপনই থাকবে। সিন্ডিকেট সভা শেষে সিদ্ধান্তগুলো উন্মুক্ত করা হয়। তার আগেই যদি পাবলিক প্লেসে এসব জানিয়ে দেওয়া হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের মর্যাদাহানি হয়, পাশাপাশি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া জটিল আকার ধারণ করে।

তারা আরও বলেন, নির্বাচনী বোর্ড হলো পরীক্ষার মতোই। এই পরীক্ষার ফলাফল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই প্রকাশিত হওয়ার বিধান রয়েছে। একজন পরীক্ষক কখনোই খাতা কেটে পরীক্ষার্থীকে প্রাপ্ত নম্বর জানিয়ে দিতে পারেন না। ঠিক তেমনিভাবে, যদি কোনো নির্বাচনী বোর্ড সদস্য এ প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে তাহলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা ও নির্বাচনী বোর্ডে নিষিদ্ধ করা উচিত। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব দায়িত্বপ্রাপ্তদের আচরণ সংবেদনশীল হওয়া বাঞ্চনীয়।

আরএম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!