প্রেমের টোপ ফেলে কিশোরীকে ধর্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভেঙে উল্টো হুমকি

কিশোরী স্কুল ছাত্রীকে প্রেম-ভালবাসার টোপ ফেলে আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে রাঙ্গুনিয়ার যুবক সাজ্জাদ। ধর্ষণের ঘটনা লুকাতে কিশোরীকে বিয়ের আশ্বাস দেয় সে। গত ৭ আগস্ট চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ঘটা ওই ধর্ষণকে কেন্দ্র করে সামাজিক লজ্জা ও ভয় দেখিয়ে মূল ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ধর্ষকের পরিবারসহ এলাকার প্রভাবশালী অনেকে।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর অভিভাবক জানান, ‘ভিকটিমের বয়স মাত্র ১৭ বছর। তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সাজ্জাদ। গত ৭ আগস্ট আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রুমের মধ্যে মেয়েকে বেঁধে রেখে ধর্ষণ করে সে। এরপর তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেবে বলে ঘটনা না জানানোর জন্য আমার মেয়েকে বোঝায় সে। একপর্যায়ে মেয়ে ঘটনা প্রকাশ করে দিলে সামাজিক লজ্জার ভয় দেখিয়ে বিয়ে করার কথা বলে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটির জন্য সামাজিক পরিস্থিতি কঠিন হতে পারে বলে বিবেচনা করে আমরা বিয়েতে সম্মত হই।’

জানা গেছে, ২৮ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিয়ে করার কথা বলে ভিকটিমের পরিবারকে সামাজিকভাবে আরও কয়েক দফা নাজেহাল করে ধর্ষকের পিতা ফোরকান সওদাগর।

ভিকটিমের পিতা বলেছেন, ‘ঘটনা নিয়ে অসম্মানের ভয়ে বিয়ে দিতে রাজি হই। অথচ এরা দেখছি বিয়ের নাম করে আমার পরিবারকে আরও অমর্যাদা করছে।’

ধর্ষণের শিকার মেয়েটি জানায়, ‘স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই সাজ্জাদের পরিচয় হয়। গত শনিবার (৭ আগস্ট) এক আত্মীয়র কাছে বেড়াতে যাওয়ার কথা বললে আমি সাজ্জাদের সাথে যাই। সেখানে দিনভর ঘরে আটকে রেখে আমাকে ধর্ষণ করে সে। রাত ৯ টায় সাজ্জাদের বাবা এসে আমাদের নিয়ে যায়। ওইসময় আমাকে এসব কথা গোপন রাখতে অনুরোধ করেন সাজ্জাদের বাবা।’

পরে সাজ্জাদের বাবা কোনভাবেই এই বিয়েতে রাজি নন বলে জানিয়ে দেন।

এদিকে টাকা নিয়ে ধর্ষণের ঘটনাটি আপোষ-মীমাংসা করতে চেয়ে নানা মহল থেকে চাপ দিচ্ছে ধর্ষকের পরিবার। সামাজিক অসম্মান ও ধর্ষণের পর বিয়েতেও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর এখন নানা হুমকিতে বিপর্যস্ত ভিকটিমের পরিবার।

এ বিষয়ে আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে রাজানগর ইউপি চেয়াম্যান ইঞ্জিনিয়ার শামশুল আলম তালুকদার বলেন, ‘এ বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার পর দুই পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করি। কিন্তু বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় মেয়ের পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করলে তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি ভিকটিমের বাবার মুখে শুনেছি। এখনও লিখিত মামলা দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ দাখিল করলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এসএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!