তিন ভবিষ্যৎ-স্থপতি পেলেন কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড, চুয়েট-ছাত্র প্রথম

তিন মেধাবী ও তরুণ ভবিষ্যৎ-স্থপতির হাতে তুলে দেওয়া হল ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডারগ্র্যাজুয়েট থিসিস’ অ্যাওয়ার্ড।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেএসআরএম ও ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) যৌথ উদ্যোগে বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর দূরদর্শিতা ও মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগিদের মধ্যে তিনজনকে মনোনীত করা হয়। পঞ্চমবারের মতো এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করলো কেএসআরএম।

এ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান। তিনি বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

মীর মনজুরুর রহমান বলেন, ‘কেএসআরএম এবং আইএবির এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই অ্যাওয়ার্ড শিক্ষার্থীদের আরও অনুপ্রাণিত করবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বিভিন্ন গ্রুপ অব কোম্পানি এমন উদ্যোগে এগিয়ে আসবে—এটাই আমার প্রত্যাশা।’

কেএসআরএম মার্কেট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শাখার মহাব্যবস্থাপক কর্নেল (অব.) মো. আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বল মনন আমাদের ভবিষ্যৎ নাগরিক নির্মাণের মূলশক্তি। এই সুন্দর মননগুলোকে চিনতে পারলে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের স্বপ্ন আর আকাঙ্খা নির্মাণে তা সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করবে।’

আইএবির সাধারণ সম্পাদক নবী নেওয়াজ খান বলেন, ‘বাংলাদেশে বতর্মানে যে মেগাস্ট্রাকচারগুলো উদ্বোধন করা হচ্ছে কিংবা যেগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে সেগুলোর প্রেক্ষিতেও একই ভাবনা কাজ করে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ও জিডিপিতে অবদান রাখার মতো প্রতিটি মেগা প্রকল্পের অংশীদার হতে পারায় আমরা গর্বিত। আমি নিশ্চিত, তরুণ প্রজন্মের মনে লালিত হচ্ছে যে আগামী, তা প্রত্যেকের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা রাখে।’

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি প্রফেসর ড. খন্দকার সাব্বির আহমেদ। সূচনা বক্তব্য দেন আইএবির সম্পাদক (শিক্ষা) স্থপতি ড. নওরোজ ফাতেমী।

এবার প্রথম অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ফাহিম আশফাক ফারুকী, দ্বিতীয় বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাহিয়া মুসতারী নওশীন এবং তৃতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ইসরাত জাহান। বিজয়ীদের হাতে যথাক্রমে ১ লাখ, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার টাকার চেক এবং সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। কেএসআরএম ও আইএবি যৌথ উদ্যোগে সেরা গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে প্রকল্প প্রদর্শনের মাধ্যমে ভবিষ্যত-স্থপতিদের এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরী, গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (ব্র্যান্ড) মনিরুজ্জামান রিয়াদ, অ্যাওয়ার্ড সমন্বয়কারী স্থপতি সৈয়দা সাইখা সুদাহ্, কেএসআরএমের প্রকৌশলী সাইফ মাওলা, সিনিয়র অফিসার মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, তাহুমুল হক বাবু প্রমুখ।

দেশের অন্যতম ইস্পাত প্রস্তুতকারী শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম প্রতিবছর তিন উদীয়মান, মেধাবী ও নবীন ভবিষ্যত-স্থপতিকে অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। এ উপলক্ষে কেএসআরএম ও আইএবির মধ্যে ১০ বছরের একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয় ২০১৯ সালে। সেই চুক্তির আওতায় আইএবি-স্বীকৃত দেশের স্বনামধন্য ১১টি আর্কিটেকচার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্নাতক পর্যায়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকেন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সেরা তিন প্রতিযোগী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।

এবার ৩৫ জন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর প্রজেক্টের মধ্য থেকে সেরা তিনজনকে বাছাই করে পাঁচজন স্থপতির জুরি বোর্ড। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে আইএবি সেন্টারে প্রজেক্টগুলোর প্রদর্শনী হয়। তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শেষ হয় ১৩ ফেব্রুয়ারি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!