চবির অডিও কেলেঙ্কারিতে চাকরি গেল কর্মচারীর, ভিসির পিএসের পদাবনতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত ফাঁস হওয়া অডিও কেলেঙ্কারি তদন্তে গঠিত কমিটি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছে। সুপারিশের আলোকে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীনকে পদাবনতি (ডিমোশন) দেয়া ও কর্মচারী আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৮তম এক্সট্রা অর্ডিনারি সিন্ডিকেট সভায় প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। আট পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির প্রস্তাবসহ দশটি সুপারিশ করা হয়েছে।

বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. এ কে এম মাঈনুল হক মিয়াজী বলেন, বুধবার (৬ জুলাই) আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। আজকে সিন্ডিকেটে সেটা গৃহীত হয়েছে। আমাদের মোট ১০টি সুপারিশ ছিল, সবগুলোই গৃহীত হয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, রেজিস্ট্রার অফিসের শিক্ষক নিয়োগ শাখার সেকশন অফিসার মো. সাকির মিয়াকে বদলি করা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রার্থীদের আবেদনের জন্য ২১ কর্মদিবস সময় দেওয়া। ইন্টারভিউয়ের তারিখের পর প্রার্থীদের ১০ কর্মদিবস সময় দেওয়া।

তিনি আরও বলেন, ইন্টারভিউয়ের তারিখ নির্ধারিত হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীকে ইমেইলে পাঠানো, তারপর রেজিস্টার্ড ডাকে পাঠানো। নিয়োগসংক্রান্ত অফিসগুলোতে যেন প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, জায়গা এবং সিসি ক্যামেরা থাকে। নিয়োগের জন্য যারা ফোন করে এরকম টাকা চান সেসব চক্রকে বের করার জন্য ফৌজদারি মামলা করারও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত পাঁচটি ফোনালাপ ফাঁস হয় গত জানুয়ারি মাসে। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার মাসখানেক পর বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ বেচাকেনা, ১৬ লাখে শিক্ষক—৮ লাখে মালি‘ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।

এরপর গত ৫ মার্চ পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য এ কে এম মাইনুল হক মিয়াজীকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে তদন্ত কমিটি অদৃশ্য কারনে গঠনের ৪ মাস পর প্রতিবেদন জমা দেয়।

ফাঁস হওয়া পাঁচটি ফোনালাপ ছিল উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী খালেদ মিছবাহুল মুকাররবীন ও হিসাব নিয়ামক দপ্তরের কর্মচারী আহমদ হোসেনের সঙ্গে দু’জন নিয়োগ প্রার্থীর।

এর মধ্যে একটি ফোনালাপে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শােনা যায়।

অপর একটি ফোনালাপে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলাের শীর্ষ ব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করতেই উপাচার্যের টাকার প্রয়ােজন বলে উল্লেখ করেছেন কর্মচারী আহমদ হোসেন।

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!