চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করে জেলে গেলেন ১২ পরীক্ষার্থী

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগে অফিস সহায়ক পদের মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে জালিয়াতির কারণে ধরা পড়েছেন ১২ পরীক্ষার্থী৷ তবে ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে এর আগে ২১ জন পালিয়ে যান। এদের মধ্যে একজন লিখিত পরীক্ষায়ও প্রক্সি দিয়েছিলেন। এছাড়া পরীক্ষায় অপরজন থেকে দেখে লেখার দায়ে আরও তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের অর্থদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

এদের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীদের এক সপ্তাহে জেল দেওয়া হয়। নকল করে লেখা তিনজনকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া লিখিত ও মৌখিক দুটোতেই প্রক্সি দেওয়া পরীক্ষার্থীকে ১৫ দিনের জেল দেওয়া হয়।

অন্যের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া পরীক্ষার্থীরা হলেন- মো. ইবরাহীম, নাইমুল ইসলাম, মুরশেদুল আলম, মো. জুনায়েদ, বিপ্লব সুশীল, মনিদীপা চৌধুরী, মোজাম্মেল হোসেন, আলী আজগর, তম্ময় দে, নন্দন দাশ, মান্না দাশ।

এছাড়া অন্যের খাতা দেখে নকল করা পরীক্ষার্থীরা হলেন প্রীতম চৌধুরী, শেখর দাশ, রহিম উদ্দিন।

তবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়া পরীক্ষার্থীর নাম জানা যায়নি।

বুধবার (১ জুন) সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম হলে এই মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা চলাকালীন ওই ১৫ জনকে আটক করা হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্ব অফিস সহায়ক লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৩ মার্চ। এরপর ১ জুন তাদের মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ২৩৭ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ধরা পড়েছেন ১৫ পরীক্ষার্থী৷ এদের মধ্যে ১২ জনের লিখিত পরীক্ষা দেন অন্যজন। এডমিট কার্ডেও ছবি জালিয়াতি করেন তারা।

মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসলে ওই ১২ জনকে আবারও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেখানে উত্তর ও হাতের লেখার অমিল পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি তিনজনকেও একইভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে তাদের আগের উত্তরপত্রের সঙ্গে লেখার মিল পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান বলেন,
‘জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখায় অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় দ্বিতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলার রাজস্ব প্রশাসনের রাজস্ব শাখাসহ ১৫টি উপজেলা ভূমি অফিস এবং ৬টি মহানগর সার্কেল ভূমি অফিসসমূহে অফিস সহায়কের শূন্যপদে ১১ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সময়ও কয়েকজন পরীক্ষা দিতে এসে ধরা খায়। তখনই আমাদের সন্দেহ হয় এমন পরীক্ষার্থী আরও থাকতে পারে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বুধবার মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসলে তাদের ধরতে তাৎক্ষণিক লিখিত পরীক্ষার মধ্যদিয়ে প্রার্থীদের দক্ষতা, মেধা ও হাতের লেখা যাচাই করা হয়। খাতা যাচাই করে প্রাপ্ত নম্বরের তারতম্যের পাশাপাশি হাতের লেখায়ও অমিল পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করে। ১৫ জন ধরা পড়লেও তাৎক্ষণিক পালিয়ে যায় ২১ জন।

আরএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!