চট্টগ্রামে সাকা চৌধুরীর বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ‘তালা’

যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর (সাকা চৌধুরী) বাড়িতে প্রতীকী তালা দিয়েছে চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড।

শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের গণি বেকারির বিপরীতে গুডস হিলের বাড়িতে এ তালা দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমর্থকরা।

চট্টগ্রামে সাকা চৌধুরীর বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ‘তালা’ 1

এ সময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা সাকা চৌধুরীর বাড়ির সামনে অবস্থান করে আন্দোলন করেন এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে উথাপিত চার দফা দাবি পূরণ না হলে আরও বড় আন্দোলনের কথা জানান তারা। এছাড়া বাড়ির সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধার উপর নির্যাতন কেন্দ্র’, ‘রাজাকারের বাড়ি’ লিখে দেওয়া হয়।

এ সময় আন্দোলনকারীরা সাকা চৌধুরীর বাড়ির সামনে উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকাও।

আন্দোলনকারীরা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় মৌলবাদীর ঠাঁই নাই’—লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভও করেন।

আন্দোলনের বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শনিবার যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর অভিশপ্ত বাড়িটি ঘেরাও করি। আমরা আজকের কর্মসূচি থেকে সরকারের চারটি দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হলো সাকা চৌধুরীর গুডস হিলের বাড়িটি জব্দ করে মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর করতে হবে, সাকার পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে ক্ষমা চাইতে হবে, দেশের সকল জেলা উপজেলা ও ইউনিয়নে রাজাকারদের তালিকা করে তা প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে দিতে হবে এবং রাজাকারদের সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসের মধ্যে যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তবে আমরা আরও কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’

এর আগে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের মহাসমাবেশে সাকা চৌধুরীর সন্তান হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বক্তব্য নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তিনি সাকা চৌধুরীসহ বিএনপির সকল নেতাদের শহীদ আখ্যা দেন। এছাড়াও হুম্মাম কাদের তিন বার নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর স্লোগান ‘নারায়ে তাকবির’ বললে প্রতিবারই ‘আল্লাহ আকবর’ বলে পাল্টা সাড়া দেন মাঠে উপস্থিত বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা আবার যখন এই পলোগ্রাউন্ড মাঠে আসবো, তখন সরকার গঠন করেই আসবো।’

হুম্মাম কাদেরের দেওয়া এই বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির সাজা হওয়া একজন মৃত মানুষকে ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসকে আরও একবার কলঙ্কিত করেছে সাকা চৌধুরীর পরিবার। তাই সেই পরিবারটি ও তার ছেলে হুম্মামের বিরুদ্ধে এমন কর্মসূচি বলে জানান মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!