ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়ার পরও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে এক ব্যবসায়ীকে হয়রানির অভিয়োগ উঠেছে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে ওই ব্যক্তিকে নির্যাতনের অভিযোগও করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের পশ্চিম দুর্গাপুর গ্রামের আবু ছালেকের ছেলে রেজাউল করিম। তাকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। এরপর তাকে তিনদিনের রিমান্ডেও নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
এর আগে গত সোমবার চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে পুলিশ বলছে, মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামি না হলেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে রিমান্ডে আনার নিয়ম রয়েছে।
জানা যায়, সিএমপির চকবাজার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক নওশাদ মাহমুদ রানার দায়ের করা একটি মামলায় গত রোববার নিজবাড়ি থেকে রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার তাকে আদালতে পাঠালে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
এর আগে গত ২ অক্টোবর চকবাজার থানায় মামলাটি লিপিবদ্ধ করা হয়। মামলার এজাহারে জিয়াউল হাসান (৩০) নামের একজনকে আসামি করে একটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে মিথ্যা ভিডিও এবং অশালীন কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাদী নওশাদ মাহমুদ রানা।
এদিকে রেজাউল করিমের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনাটি পরিকল্পিত। রেজাউল করিম ওই মামলার আসামি নন। মামলার এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে রেজাউল করিমের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মামলার বাদী নওশাদ মাহমুদ রানার সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
এজাহারে নাম নেই এমন লোকের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার কোনো কারণ নেই মনে বলে জানান চট্টগ্রামের আইনজীবী জুবাঈদা সরওয়ার নিপা। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা অতীতে দেখিনি। রিমান্ডের নামে ওই ব্যক্তিকে নির্যাতনের সন্দেহ হচ্ছে আমাদের। এ ঘটনায় যিনি অভিযুক্ত বা যার সিম ব্যবহার করেছে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। তদন্তে তথ্য-প্রমাণে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেপ্তার করা যায়। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এখানে কারো সঙ্গে ব্যবসায়িক কোনো দ্বন্দ্ব আছে কিনা আমার জানা নেই। মামলার প্রয়োজনীয় তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা তার রিমান্ড চেয়েছেন।’
রিমান্ডে নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসি বলেন, ‘রিমান্ডে নিয়ে কাউকে নির্যাতন করার সুযোগ নেই।’
এএস/ডিজে