চট্টগ্রামে আইসিইউ ভেন্টিলেটর সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান সুজন

চট্টগ্রামবাসীকে করোনার করাল গ্রাস থেকে বাঁচাতে আইসিইউ ভেন্টিলেটরসহ প্রয়োজন সুবিধা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নগর আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

মঙ্গলবার (১৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজন বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ইতিমধ্যে আপনার দেওয়া ৩১ দফা নির্দেশনা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সুজন বলেন, ‘জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে আপনি বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলাও একটা যুদ্ধ, যে যুদ্ধে মানুষের দায়িত্ব হবে ঘরে থাকা। আপনি দেশের একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষ দিন-মজুর শ্রেণী, কামার-কুমার, রিক্সাওয়ালা, ভ্যানওয়ালা থেকে শুরু করে ছোট ছোট দোকানদার এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ প্রত্যেকের কথা চিন্তা করেই বিশাল অংকের প্রণোদনা ঘোষণা দিয়েছেন। দেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পূর্ব থেকেই আজ পর্যন্ত আপনি সবকিছু নিজ হাতে দক্ষতার সাথে সামলে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রাণান্তকর সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম আজ করোনা রোগীর চাপে বেসামাল। এই শহরের মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। অথচ এই শহর থেকেই দেশের শতকরা ৮০ ভাগ আয় জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, চট্টগ্রাম শহরে দ্রুততার সাথেই করোনা সংক্রমিত হচ্ছে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। করোনা নমুনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত সুবিধা এখানে অপ্রতুল, নেই জীবন রক্ষাকারী আইসিইউ, নেই ভেন্টিলেটর, নেই বলতে কিছুই নেই। মানুষের জীবন আজ মৃত্যুর মুখোমুখি।’

করোনা রোগীর জন্য নির্ধারিত জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে কোন সিট খালি নেই উল্লেখ করে সুজন প্রশ্ন রাখেন, ‘এরপর চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত কোন রোগী কি আইসিইউ সিটের অভাবে পথে পথে মারা পড়বে? এই শহরের লোক যারা দেশে কিংবা প্রবাসে থেকে দেশের অর্থনীতির সিংহভাগ যোগান দিচ্ছে সেই চট্টগ্রাম আজ করোনা রোগে শিকার হয়ে অসহায়ের মতো মৃত্যুবরণ করছে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসীর চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর জন্য কি কেউ নেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রামের মানুষকে আজ মৃত্যুর মুখোমুখি ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই শহরে বিশাল সুউচ্চ অট্টালিকা সমমানের বেসরকারি হাসপাতাল আছে। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনে সেসব হাসপাতালের দরজা বন্ধ, প্রবেশ নিষেধ। চট্টগ্রামের মানুষ যদি চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে মারা যায় তাহলে এতো বড়ো সুরম্য চিকিৎসা স্থাপনাগুলো থেকে কি লাভ?’

সুজন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আজ এই শহরের জন্য কারো কোন মায়া মমতা নেই। এই শহরে এই মূহুর্তে একজন রোগীর আইসিইউ সুবিধার প্রয়োজন হলে সে রোগী নির্ঘাত বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে। কোন বেসরকারি হাসপাতালের মালিকের হৃদয় সেই রোগীর জন্য কেঁদে উঠবে না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অথচ বছরের পর বছর এই সব বেসরকারি হাসপাতালের মালিকরা রোগের চিকিৎসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। কিন্তু জনগনের চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির এই চরম দুঃসময়ে তাদের অন্তর পাথরের মতো পাষাণ হয়ে গিয়েছে।’

খোরশেদ আলম সুজনের দাবি, ‘এসব বেসরকারি হাসপাতালে অন্তত পক্ষে করোনার নমুনা হলেও পরীক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। সরকারী দুইটি হাসপাতাল ছাড়া চট্টগ্রামের বাকি হাসপাতালগুলোও এই মুহুর্তে কার্যত অলস সময় পার করছে। অথচ একটুখানি উদ্যোগ নিলেই এই হাসপাতালগুলোকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা উপযোগী করে তোলা যেতো। দরকার শুধু একটুখানি শুভ উদ্যোগ আর সমন্বয়।’

এই সংকট থেকে উত্তরণে খোরশেদ আলম সুজন প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!