গৃহবধূ হত্যার আলামত নষ্টের পর এবার মামলা তোলার চাপ, নেপথ্যে এক মেম্বার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গৃহবধূ হোসনে আরা আক্তার লিপি হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় তৎপর প্রভাবশালী একটি মহল। স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ওই প্রভাবশালী মহল বাদিকে মামলা তুলে নিতে নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে মিরসরাই প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নিহত গৃহবধূ লিপির চাচা মফিজুর রহমান, মোহাম্মদ ইকবাল ও চাচাতো ভাই সিরাজদৌলা। এ সময় লিপির বাবা শেখ আলমও তাদের সঙ্গে ছিলেন।

গৃহবধূ লিপির চাচা মফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, স্থানীয় দুই নম্বর হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যম আজমনগর ওয়ার্ডের সদস্য দ্বীন মোহাম্মদ গত দুইদিন ধরে মামলা তুলে নিতে লিপির পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এছাড়া মামলা তুলে নেওয়ার শর্তে মোটা অংকের টাকা দেওয়ারও প্রস্তাব করছেন তিনি।

mirsarai-lipi-killing
মিরসরাই প্রেসক্লাবে গৃহবধূ লিপির পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

এ বিষয়ে কথা বলতে হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যম আজমনগর ওয়ার্ডের সদস্য দ্বীন মোহাম্মদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।

লিপির আরেক চাচা মোহাম্মদ ইকবাল অভিযোগ করেন, ঘটনার রাতে লিপির মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনার আলামত সংগ্রহ করে ওই ঘর তালাবদ্ধ করে দেয় পুলিশ। অথচ গত বুধবার মেম্বার দ্বীন মোহাম্মদ তালা খুলে ঘরে ঢুকে ধুয়েমুছে খুনের সবরকম চিহ্ন নষ্ট করে ফেলে।’ এ সময় তিনি যোগ করেন, ঘটনার পর থেকে আমরা লিপির নিকটাত্মীয় হয়েও ওই ঘরে ঢুকতে পারিনি। ঘটনার রাতে আমাদের পরিবারের লোকজন পৌঁছানোর আগেই পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১০ জুন) দিবাগত রাতে মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মধ্যম আজমনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়ির শোবার ঘর থেকে পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূ লিপির মরদেহ উদ্ধার করে। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরদিন মঙ্গলবার ১১ জুন জোরারগঞ্জ থানায় স্বামী কামাল উদ্দিন, শ্বাশুড়ি হোসনেয়ারা বেগম ও শ্বশুর নূর মোহাম্মদকে আসামি করে একটি হত্যামামলা দায়ের করেন গৃহবধূ লিপির বাবা শেখ আলম।

ঘটনার পর থেকে আসামিদের সকলেই আত্মগোপন করে আছেন। লিপির বাড়ি একই ইউনিয়নের মেহেদীনগর গ্রামে। প্রবাসী কামালের সঙ্গে লিপির দাম্পত্যজীবনের শুরু হয় মাত্র চার বছর আগে। চার মাস আগে তাদের ঘরে আসে ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!