করোনার কালে চট্টগ্রামেই অপরাধ বেশি, ঢাকা দ্বিতীয়

আইএফইএসের জরিপ

করোনাভাইরাসের মহামারী শুরু হওয়ার পর অস্থিরতা-সহিংসতার ঘটনা বেশি ঘটেছে চট্টগ্রামেই। দেশজুড়ে অনিয়ম ও আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে এক জরিপে দেখা গেছে, এসব ঘটনার ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশই ঘটেছে চট্টগ্রাম বিভাগে।

জরিপে দেখা গেছে, বিভাগীয় পর্যায়ে সহিংতার ঘটনায় শীর্ষে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। সিলেট বিভাগের স্থান সর্বনিম্নে। অন্যদিকে জেলা পর্যায়ে সামাজিক অস্থিরতার দিক থেকেও প্রথম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। এই জেলায় সর্বাধিক ৮৯টি ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বরিশাল (৬১টি), হবিগঞ্জ (৫৮টি), ঝিনাইদহ (৫৫টি)। মাত্র ১১টি ঘটনা নিয়ে তালিকার শেষে রয়েছে মেহেরপুর। করোনাভাইরাস সঙ্কটে সংঘর্ষ ও সহিংসতার দিক থেকে সবচেয়ে আলোচিত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটেছে মাত্র ২০টি ঘটনা।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তখন থেকে গত দুই মাসে দেশের ৬৪ জেলার ঘটনার পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১০ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৬৪টি জেলায় আর্থ-সামাজিক দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৪১৬টি। এর মধ্যে মার্চে ৩৪৭টি এবং এপ্রিলে এক হাজার ৬৯টি ঘটনা ঘটেছে।

ইউকেএআইডির সহায়তায় ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্ট্রোরাল সিস্টেম (আইএফইএস) পরিচালিত এই জরিপ থেকে জানা যায়, শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলেই সামাজিক অস্থিরতার ঘটনা বেশি দেখা গেছে। দেশজুড়ে মহামারী অবরুদ্ধ দশার এই সময়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ৫৯ দশমিক শূন্য চার শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে গ্রামে। শহরাঞ্চলে এমন ঘটনা পাওয়া গেছে তুলনামূলক কম— ৪০ দশমিক নয় ছয় শতাংশ।

আইএফইএস পরিচালিত এই জরিপে কাজ করেছেন দেশের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন তরুণ গবেষক। জরিপ সমন্বয় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম।

জরিপে দেখা গেছে, এসব সংঘর্ষ ও সহিংসতার ২৫ দশমিক পাঁচ নয় শতাংশ ঘটনার সঙ্গে সাধারণ মানুষ জড়িত। অন্যদিকে ১৩ দশমিক পাঁচ দুই শতাংশ ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ১৭ দশমিক পাঁচ পাঁচ শতাংশ ঘটনায় প্রশাসন, ৮ দশমিক চার চার শতাংশ ঘটনার সাথে রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক, ৭ দশমিক পাঁচ দুই শতাংশ ঘটনার সাথে গ্রাম্য মাতব্বর এবং ৬ দশমিক দুই শূন্য শতাংশ ঘটনার সাথে ব্যবসায়ীরা জড়িত রয়েছেন।

দুই মাসে সংঘর্ষের বিভিন্ন ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৯ জন, আহত হয়েছেন ৪৮৬ জন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন ৮০২ জন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!