আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে হঠাৎ বিদায় জানালেন তামিম ইকবাল

আগের রাত থেকে ক্রিকেটাঙ্গনে শুরু হয় অধীর আগ্রহের। কি এমন বলার জন্য হঠাৎ করে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিলেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এমনিতে গত বেশ শেষ কিছুদিন ধরে ফিটনেস ও ফর্মের রসায়ণ জমছিল না কিছুতেই। দেশের সেরা ওপেনার ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। তাতে শঙ্কার মেঘ জমছিল তার আকাশে। সেই মেঘ এবার বৃষ্টি হয়ে ঝরলো। আর তামিম ইকবাল নিয়ে নিলেন নিজের ক্যারিয়ারের কঠিনতম সিদ্ধান্ত। বিদায় জানালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে।

অনেক জল্পনা, নানামুখী আলোচনার পর অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ধ্রুবতারা তামিম ইকবাল। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) নিজ শহর চট্টগ্রামেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন।

সংবাদ সম্মেলনে তামিম যা বলেন- ‘নরম্যালি, এরকম পরিস্থিতিতে মানুষ স্পিচ লিখে আসে। কিন্তু আমার সেরকম কোনো প্রস্তুতি নেই। আমার পুরো ক্যারিয়ারেই আমি কখনো কোনো স্পিচ দিয়ে কিছু বলিনি।

খুব বেশি বড় করবো না। গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমি আমার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত এখন থেকেই কার্যকর হতে যাচ্ছে। এটার পেছনে সাডেন কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। আমি নিজ থেকে এটা নিয়ে চিন্তা করছিলাম। ভিন্ন ভিন্ন কারণ আছে যেগুলো আমার এখানে বলার দরকার আছে।

এটা না যে আমি হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বেশ কয়েকদিন ধরে কথা বলছিলাম। আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমি মনে করি এটা সেরা সময় সরে দাঁড়ানোর, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার।’

এর আগে ২০২২ সালের ১৬ জুলাই হঠাৎই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে টি-টোয়েন্টি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তামিম। এর-ও ছয় মাস আগে এই ফরম্যাট থেকে সেচ্ছ্বাবিরতি নিয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর থেকে শুধু টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ১২ মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই সেরে গেলেন।

ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তামিম। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি।

টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।

টি–টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই সংস্করণে দেশের হয়ে শুধু তামিমই সেঞ্চুরি করেছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন। দেশের আর কোনো ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত রান করতে পারেননি।

আরএ/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!