অনুপের মদের মহাল বেড়িয়ে এল নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর

সরিয়ে নেওয়া হল তদারককারী দুজনকেও

চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিবাজারে অনুপ বিশ্বাসের মদের মহালে অভিযান চালিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় এ অভিযান পরিচালনা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (চট্টগ্রাম মেট্রো) উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘নিয়মিত তদারকির অংশ হিসেবে আমরা এ অভিযান পরিচালনা করি। লাইসেন্সের শর্তাবলী মেনে চলছে কিনা তা তদারকি করেছি।’

প্রসঙ্গত, অনুপ বিশ্বাসের মদের মহাল নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এটি তদারকির জন্য দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়। জনবল সংকটের অজুহাতে সেই দুই কর্মকর্তাকে সম্প্রতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শামীম আহমেদ বলেন, ‘পুরো মেট্রো অঞ্চলে আমিসহ মাত্র ৬ জন আছি। জনবল বাড়লে আবারও নিয়োজিত রাখা হবে।

সরকারি তথ্যমতে, চট্টগ্রাম নগরীতে রয়েছে চারটি মদের মহাল। কোতোয়ালী থানা এলাকায় দুটি, চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথায় একটি, আরেকটি ইপিজেড থানার মাইলের মাথা এলাকায়। বিভিন্ন হোটেলসহ মদের বার রয়েছে ১৬টি। বৈধ মদ্যপ সাড়ে পাঁচ হাজার বলা হলেও তার সঠিক পরিসংখ্যান আরও কয়েকগুণ বেশি।

লাইসেন্সের ক্ষেত্রে মুসলমান হলে চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া মদ বা মদজাতীয় পানীয় পান করতে পারবে না। চিকিৎসকের সনদ নির্ধারিত ফরমে যুক্ত করে আবেদন করতে হবে। অমুসলিম নাগরিকেরা কোনো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন না। তাছাড়া মুচি, মেথর, ডোম, ঝাড়ুদার ও চা-বাগানের শ্রমিক ‘পারমিট’ নিয়ে দেশি মদ কিনতে পারবেন। ২১ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তির কাছে মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

অন্যদিকে বিদেশি মদের পারমিট পাওয়ার জন্য অমুসলিমদের জন্য বাৎসরিক পারমিট ফি দিতে হয় ৩০০ দুই হাজার টাকা এবং ভ্যাট ৩০০ টাকা। আর ডাক্তারের সার্টিফিকেটসহ মুসিলমরা যদি পারমিটের জন্য আবেদন করেন তার ক্ষেত্রেও একই হারে ফি ও ভ্যাট দিতে হবে। আবার বাংলা বা দেশীয় মদের পারমিট প্রাপ্তির জন্য অমুসলিম ও মুসলিমের জন্য একই নিয়ম। তবে এক্ষেত্রে বাৎসরিক ফি মাত্র ৮০ টাকা ও ১২ টাকা ভ্যাট দিতে হবে।

অন্যদিকে বিদেশি মদ আমদানি নীতিমালা মেনে নির্ধারিত শুল্ক দিয়ে দুই থেকে পাঁচ বা তার চেয়ে বেশি তারকাযুক্ত হোটেল, পর্যটন বা কূটনৈতিক এলাকা, রেস্টুরেন্ট, ক্লাবে মদ আমদানির সুযোগ রয়েছে। আর অনুমোদিত চার মদের মহালে তাদের চাহিদা অনুযায়ী মদ সরবরাহ করা হয়ে থাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে।

একটি মহালে কমপক্ষে ২০০ লিটার আর সর্বোচ্চ ৪০০ গ্যালন মদ সরবরাহ করা হয়। এক গ্যালনে মদ থাকে সাড়ে চার লিটার করে। সে হিসেবে ১৮০০ লিটার মদ সরবরাহ করা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে। এসব মদ আনা হয় দেশের একমাত্র বাংলা মদ উৎপাদনকারী কারখানা ঈশ্বরদী থেকে।

তবে এসব মদ মহালে নিয়ে পানি মিশিয়ে ভেজাল করার অভিযোগও রয়েছে মদের মহালের মালিকদের বিরুদ্ধে। আবার অনেকে বিদেশ থেকে আমদানি না করেও চট্টগ্রামেই ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করছেন। সেই মদ খেয়ে চলতি বছর আকবর শাহ এলাকায় তিন যুবকের মৃত্যুর পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর পুলিশ ওই চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেপ্তারও করেছিল।

এফএম/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!