চট্টগ্রামের এক ল্যাবেই করোনার ১২০০ নমুনার পাহাড় জমেছে

জট কাটাতে নগরজুড়ে বসছে সাতটি বুথ

করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামে একটির জায়গায় এখন তিনটি ল্যাব হয়েছে। তবু নমুনা জটের সেই চেনা ছবিটা বদলায়নি একটুও। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামের করোনার প্রধান পরীক্ষাগার ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি ল্যাবে ১২০০ নমুনা জমে আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লোকবলের অভাবে নমুনা জটের এই পাহাড় একটুও টলাতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। এই জটের সমাধান খুঁজতে এবার শহরের বিভিন্ন স্থানে নমুনা সংগ্রহের বুথ বসানোর কথা ভাবছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ।

ব্র্যাক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় শহরের সাতটি আলাদা স্থানে নমুনা সংগ্রহের এসব বুথ বসানোর বিষয়ে এর মধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও সেরে ফেলেছেন সংশ্লিষ্টরা। এই বিষয়টি নিয়ে সোমবার (১১ মে) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের আহবানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ব্র্যাকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজারও উপস্থিত ছিলেন।

ব্র্যাক ও চসিকের সহযোগিতায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সাতটি বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহের পরিকল্পনার বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ারর কবির।

বিআইটিআইডিকে নমুনা পরীক্ষায় আরও বেশি সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনটি ল্যাবে পরীক্ষা হচ্ছে ঠিক। কিন্তু নমুনা সংগ্রহ করছে শুধু বিআইটিআইডি। দিনভর তারা নমুনা সংগ্রহ করে সেসব চমেক ও সিভাসুকে দেয়। নিজেরাও টেস্ট করে। একই লোক দিয়ে নমুনা সংগ্রহ ও টেস্ট সবই করতে হচ্ছে বলে তাদের উপর বেশি চাপ হয়ে যাচ্ছে।’

‘যদি তাদের ওপর থেকে এই চাপটা কমানো যায়, তাহলে তারা আরও বেশি টেস্ট করতে পারবে। আমরা এর মধ্যে ব্র্যাকের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার ও চসিকের সাথে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছি। শহরের কোণায় কোণায় সাতটি বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছি আমরা। তবে এগুলো কোথায় বসানো হবে তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি আমরা। ব্র্যাক জানিয়েছে তারা প্রস্তুত আছে।’

এই বিষয়ে বিআইটিআইডির ল্যাব ইনচার্জ অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার শুরু থেকেই সাজেশন ছিল যে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বারবার বলছি এটা একদিনের জন্য আসেনি। এখন ৮ জন লোক দিয়ে আমরা সারাদিন নমুনা সংগ্রহ করাচ্ছি। দিনভর পতেঙ্গা থেকে বালুছড়া পর্যন্ত আমরা নমুনা সংগ্রহ করি। তো লোকজন যখন নমুনা সংগ্রহ করে, তখন ল্যাবের কাজ বন্ধ থাকে।’

‘এভাবে আমাদের লোকবল সংকটের কারণে টেস্ট করার সুযোগ কমে যাচ্ছে। আমাদের ওপর প্রেসার ওভারলোড হয়ে গেছে। এখন প্রায় ১২০০ নমুনা জমে গেছে। তো একপর্যায়ে লোড নিতে না পারলে এসব স্যাম্পল শেষ করা পর্যন্ত নমুনা নেয়া বন্ধ করে দিতে হবে আমাদের। তখন তো আর মানুষের যাওয়ার কোন জায়গা থাকবে না’— সমস্যার ব্যাপকতা ব্যাখা করে বলেন ডা. শাকিল আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘এই যে প্রবলেমটা তৈরি হচ্ছে, এটা থেকে উদ্ধার হওয়ার একটাই সমাধান— টেস্টের সক্ষমতা বাড়ানো। সুতরাং নমুনা সংগ্রহসহ অন্য লোডগুলো আমাদের কাছ থেকে সরিয়ে নিতে হবে।’

‘তাই আমি বলেছি এই ধরনের বুথ করে নমুনা সংগ্রহ করা গেলে আমাদেরও লোড কমবে। তাছাড়া মানুষেরও দশ জায়গায় দৌড়ানো লাগবে না। নিজ নিজ এলাকায় নমুনা দিতে পারলে সংক্রমণও ছড়াবে কম।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!