জলসীমা বাড়ায় আয় বাড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরের

চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমা ছয়গুণ বেড়ে ৫০ নটিক্যাল মাইল হয়েছে সম্প্রতি। সীমানা বৃদ্ধির হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহজগুলো থেকে আয় শুরু হয়েছে বন্দরের। জলসীমা বাড়ার কারণে বন্দরের সীমানায় অবস্থানরত জাহাজগুলোকে কিছু সুনির্দিষ্ট সেবা প্রদান করা হয়। এসব সেবার বিপরীতে জাহাজগুলো পোর্ট ডিউজ এবং রিভার ডিউজ প্রদান করবে। ২৫ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর এই খাতে আয় করেছে ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা। মার্চ এবং এপ্রিল মাসে এই খাত হতে যে ডিউজগুলো পাওয়া যাবে তা এখনো বকেয়া রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর বলছে সময় বাড়ার সাথে সাথে এই খাতে আয়ের পরিমাণ আরো বাড়বে।

চট্টগ্রাম বন্দরের উপ সংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. ফরিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমা আগে ছিলো সাত নটিক্যাল মাইল এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৫০ নটিক্যাল মাইল। আগে পোর্ট লিমিট কম হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর নানা সেবা প্রদান করেও প্রাপ্য ডিউজ পেত না। এখন বন্দর সীমানা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন খাতে জাহাজগুলোকে মাসুল প্রদান করতে হবে। কয়েকবছরের মধ্যে মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর নির্মাণ শেষ হবে। এর ফলে রেশন কার্যক্রম শুরু হলে এই খাতে আয় আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে। তখন প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি টাকা আয় হবে চট্টগ্রাম বন্দরের।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, বহির্নোঙ্গরে জাহাজ অবস্থানকালীন সময়ে জাহাজগুলোকে কিছু সেবা প্রদান করা হয়। বর্তমানে হাজবেন্ডারি জবের আওতায় জাহাজগুলোকে পানি সরবরাহ থেকে শুরু করে কিছু কিছু সেবা প্রদান করছে সামিট পাওয়ার ও একসিলারেট এনার্জি। বর্হিনোঙ্গরে জাহাজে পানি সরবরাহ, নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় সেবার পরিসর বাড়তে ইতোমধ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

পোর্ট লিমিট বাড়ার পর ৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় শীঘ্রই বন্দর সীমানায় এআইএস ও ভিএইচএফ নেটওয়ার্ক সৃষ্টির মাধ্যমে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া, বর্ধিত বন্দর জলসীমায় অবস্থানরত জাহাজ থেকে বকেয়াসহ অন্যান্য সকল চার্জ আদায়ের জন্য লাইসেন্স অফিস স্থাপন করা, পোর্ট লিমিট সম্পর্কিত সরকারি গেজেট প্রচারের তারিখ থেকে ওই এলাকায় আসা জাহাজগুলোর তালিকা চেয়ে কোস্টগার্ড বরাবর চিঠি পাঠানো, বর্ধিত জলসীমায় স্থাপিত সকল বন্দর স্থাপনার সঙ্গে বার্থহায়ার চার্জ এবং অন্যান্য চার্জ ভাগাভাগির বিষয়ে অপারেশনাল চুক্তি সম্পাদন এবং চবক-এর বর্ধিত বহির্নোঙ্গর সংলগ্ন এলাকা বিশেষত কুতুবদিয়া, মাতারবাড়ি, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই এলাকায় নৌ-টহলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোস্টগার্ড বরাবরে চিঠি প্রেরণ বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। সেসব সিদ্ধান্তের আলোকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সহকারী হার্বার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. আতাউল এইচ সিদ্দিকী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সমুদ্রসীমা বাড়ার কারণে জাহাজের গড় অবস্থান এবং আগমন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে আয় হতে থাকবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ শেষে অপারেশনাল কাজ শুরু হলে এই খাত থেকে প্রতিদিন ১ কোটি টাকার বেশি আয় হবে বন্দরের। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে এই খাত থেকে আয় শুরু হয়েছে। দিন দিন আয়ের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!