সব থানায় ‘হ্যালো ওসি’ ছড়াতে চান সিএমপি কমিশনার

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীনের নেওয়া ‘হ্যালো ওসি’ উদ্যোগেটি সকল থানায় ছড়িয়ে দিতে চান পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। সেজন্য এখন থেকে পুলিশের প্রতি জনগণের ভীতি দূর করতে সিএমপির প্রতিটি থানায় ‘হ্যালো ওসি’ কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মাসে কমপক্ষে একদিন হলেও থানার যে কোনও একটি এলাকায় গিয়ে ‘হ্যালো ওসি’র আদলে জনগণের মাঝে সেবা প্রদান করতে ওসিদের বলেছেন পুলিশ কমিশনার।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে দামপাড়া পুলিশ লাইনের মাল্টিপারপাস শেডে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা ও অপরাধ সভায় সিএমপির ১৬ থানার ওসিদের প্রতি তিনি এ নির্দেশ দেন।

এর আগে পুলিশ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে এ বছরের শুরুতে কোতোয়ালী থানা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্টলের ভিড়ে ‘হ্যালো ওসি’ নামে একটি ব্যতিক্রমী বুথ স্থাপন করেন ওসি মহসীন। ব্যতিক্রমী এই বুথে বসে ওসি মহসীন নিজেই সরাসরি সেবাপ্রার্থী জনগণের সঙ্গে কথা বলেছেন, দিয়েছেন তাৎক্ষণিক সমস্যার সমাধান। সেই সময় ব্যতিক্রমী এই বুথের কার্যক্রম ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল পুলিশ ও জনগণের মাঝে।

এরপর সম্প্রতি ১০ জুলাই কোতোয়ালী থানার বিআরটিসির চৌদ্দ জামতলা এলাকায় ‘হ্যালো ওসি’ বুথ নিয়ে হাজির হন ওসি মোহাম্মদ মহসীন। ওই দিন তিনি অনেকে পুলিশ ও জনগণের সঙ্গে কীরকম সর্ম্পক হওয়া উচিত তার ধারণা নেন। কেউ কেউ মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তথ্য দেন। আবার কয়েকজন ওসির কাছে এসে মাদকের পথ ছেড়ে স্বাভাবিক পথে ফিরে আসতে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন। এতে ওসি মহসীনও সায় দেন।

‘হ্যালো ওসি’ কার্যক্রমটি নগরবাসীর পাশাপাশি নজর কেড়েছে সিএমপির অভিভাবক মাহবুবর রহমানেরও। বুধবার দুপুরে সিএমপির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনায় মাহবুবর রহমান নগরীর ১৬ থানার ওসিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কোতোয়ালী থানার ওসি মহসীন হ্যালো ওসি নাম দিয়ে যে কর্মসূচিটা শুরু করেছে এটা খুবই ভালো কাজ। যদিও আপনাদের অনেকেই এটা নিয়ে নাক সিঁটকাতে পারেন। কিন্তু ভালো কাজকে অবশ্যই ভালো বলতে হবে। ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে। এই প্রোগ্রাম সারা শহরে ছড়িয়ে দিতে হবে। এখন থেকে প্রত্যেক মাসে প্রতি থানায় একটি স্থানে হলেও এই কার্যক্রম চালু করতে হবে। জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে।’

সব থানায় ‘হ্যালো ওসি’ ছড়াতে চান সিএমপি কমিশনার 1

জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ওসি মহসীনের হ্যালো ওসির বিষয়টা ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয়। এ কাজের মাধ্যমে পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নিবিড় হবে। আমরা এটাকে সিএমপির সব থানায় ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে প্রত্যেক ওসি মাসে কমপক্ষে একবার নিজ নিজ থানার বিভিন্ন বিট পুলিশিং এলাকায় গিয়ে এ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। যেসব এলাকার লোকজন থানায় আসতে ভয় পায়, পুলিশের সরাসরি সেবা থেকে বঞ্চিত তাদের কাছেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেতে হবে। তাদের সমস্যা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবেন।’

মাসিক অপরাধ সভায় পুলিশ কমিশনারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আমেনা বেগম, সকল উপ-পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার, সকল থানার অফিসার ইনচার্জসহ বিভিন্ন স্তরের পুলিশ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিএমপির সেবা তহবিল হতে ৩১ পুলিশ সদস্য ও সিভিল স্টাফদেরকে নগদ ১৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সভায় জুন মাসে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার ও ভাল কাজের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন স্তরের ৬১ পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়।

সেরা হয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা, বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন ও বাকলিয়া থানার এসআই বেলাল উদ্দিন।

এডি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!