শাটল দুর্ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল চবি, ৪ জনের অবস্থা গুরুতর, উপাচার্যের বাসায় হামলা ও আগুন

গাছের ধাক্কায় ১৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনে গাছের সঙ্গে ধাক্কায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৬ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর। ঘটনার পর চবি উপাচার্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবনে হামলা ও আগুন দিয়েছে একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শাটল দুর্ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল চবি, ৪ জনের অবস্থা গুরুতর, উপাচার্যের বাসায় হামলা ও আগুন 1

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে হাটহাজারীর চৌধুরীহাট এলাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। চৌধুরীহাট স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেললাইনের ওপর ঝড়ে হেলে পড়া একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী ট্রেনের ছাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু শিক্ষার্থী ভ্রমণ করছিলেন। ট্রেনটি চৌধুরীহাট পৌঁছলে হঠাৎ গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে অন্তত ১৬ জন শিক্ষার্থী আহত হন। খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এম্বুলেন্সে করে আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে আটজনকে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। আহত অপর আটজনকে রাখা হয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী জুনায়েদ খান বলেন, ‘আমি ছাদ থেকে ৩ জনকে আহত অবস্থায় নামিয়েছি। এর মধ্যে দুজনের মাথা ফাটা ছিল। আরেকজন পায়ে আঘাত পান। ট্রেনের অন্য পাশ দিয়ে আরো ৩ জনকে নামানো হয়।’

উপাচার্যের বাসায় হামলা ও আগুন
এদিকে দুর্ঘটনার পর রাত সাড়ে আটটার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত শাটল ট্রেনটি বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে পৌঁছানোর পর ট্রেনটি আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইটও বন্ধ করে দেন। শুরুতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালান। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরে থাকা ২৪টি বাস ছাড়াও অন্তত ১৫টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসও ভাঙচুর করে। হাটহাজারীর চৌধুরী হাটেও এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এর একপর্যায়ে একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে উপাচার্যের বাসভবনে। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় ওই অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তবে এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বাঙলোতে ছিলেন না।

এদিকে রাত ১২টার দিকে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. খায়রুল ইসলাম। উপাচার্য আহতদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বহনের ঘোষণাও দেন।

প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। এটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমার প্রশাসনের শিক্ষকরা মেডিকেলে আমার সাথেই আছে। আমরা সবধরনের সহযোগিতা করছি। তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আর্থিক বিষয়সহ যা যা করা দরকার সবকিছুই প্রশাসন করবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!