বন্দরের স্টোর রেন্ট মওকুফের সময় বাড়ানোর দাবি

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কন্টেইনারের স্টোর রেন্ট মওকুফের সময়সীমা ১৬ মে পর্যন্ত বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরকে আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিপূর্বে ঘোষিত রেন্ট মওকুফের সময়সীমা সোমবার (৪ মে) শেষ হয়েছে। বর্তমান অচলাবস্থার কারণে ব্যাংকের আর্থিক যোগানের অভাব, তারল্য সংকট, পরিবহন সংকট, শ্রমিক সংকটের কারণে সময়মত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি নেওয়াও সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্যববসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, কন্টেইনারগুলোর স্টোর রেন্ট শতভাগ (১০০%) মওকুফ করায় আমদানিকারকরা যেসব শিপমেন্টের অরিজিনাল ডকুমেন্ট এবং ব্যাংক গ্যারান্টি কনফার্ম করতে পারছে তারা দ্রুতগতিতে ডেলিভারি নিচ্ছে। এর ফলে বন্দরে আগের চেয়ে কন্টেইনার জট অনেকাংশে কমেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী শাহির ট্রেডের সত্ত্বাধিকারী সরওয়ার আলম চৌধুরী বলেন, ‌‘বন্দর যদি স্টোর রেন্ট মওকুফ না করে তাহলে ২০-২৫ শতাংশ কনটেইনার নিলামে চলে যাবে। কারণ ব্যবসায়ীরা বন্দর ডেমারেজের কারণে কনটেইনারগুলো খালাস নিতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের ইচ্ছে থাকার পরও কনটেইনার ছাড় নিতে পারে নাই। যার কারণ হচ্ছে আমদানি করা পণ্যের কাগজপত্র ওই দেশ থেকে যথাসময়ে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেনি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ওই দেশেও করোনার কারণে লকডাউন থাকা। ফলে এদিকে বন্দরে জাহাজ এসে পৌঁছালেও আমরা কনটেইনার ডেলিভারি করাতে পারিনি। বিভিন্ন ধরনের জটিলতার কারণে আমদানিকারকরা সময়মত পণ্য ডেলিভারি নিতে পারছেন না। তাই আমদানিকৃত কন্টেইনারগুলোর স্টোর রেন্ট শতভাগ (১০০%) মওকুফের সুযোগ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলে সব অরিজিনাল ডকুমেন্ট ও ব্যাংক গ্যারান্টির ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে পণ্য ডেলিভারি নিতে সক্ষম হবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরে অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসবে।

তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ডিএমডি গ্রুপের চেয়ারম্যান রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, নানা সংকটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি নিতে না পারায় সরকার ঘোষিত আমদানি পণ্যের স্টোররেন্ট মওকুফের সময় ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বন্দর কর্তৃপক্ষের এ সুযোগটা দেওয়া উচিত। ১৬ মে পর্যন্ত স্টোররেন্ট মওকুফের জন্য নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এ সুযোগটা দিলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। না হয় বন্দরের ডেমারেজ দিতে গিয়ে অনেক ব্যবসায়ীকে পথে বসতে হবে।’

উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ থেকে ৪ মে পর্যন্ত ডেমারেজ মওকুফ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মেয়াদ শেষের আগেই লকডাউনের পুরো সময়জুড়ে এই সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। গত শনিবার চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া দেওয়া চিঠিতে রুবানা হক বলেন, ‘পোশাক শিল্পের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি বা লকডাউন যতদিন থাকবে ততদিন পণ্য খালাসে বন্দরের ডেমারেজ চার্জ মওকুফের সময় বাড়ানো আবশ্যক।’

এএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!