বন্ডসই দিয়ে চলে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে আহত রোগীরা, সঙ্গে পাচ্ছে ২ সপ্তাহের ওষুধ

চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রতিবেদনের পর নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর কন্টেইনার বিস্ফোরণে আগুনে পোড়া আহত রোগীরা বন্ডসই দিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। ছাড়পত্রের সঙ্গে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে দু’সপ্তাহের ওষুধ। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী। তাই এ চিকিৎসা হাসপাতালে থেকে করা ভালো।

রোববার (১২ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি ৪৭ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৮ জন, পার্কভিউতে ৭ জনসহ মোট ৬২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তবে ৩১ এবং ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পোড়া রোগীরা বাড়ি চলে যেতে চাচ্ছেন। চিকিৎসাধীন রোগীদের অনেকেই জানান, ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। এখান থেকে গিয়ে কী করবো? কী খাব? এ অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে মন চাইছে না।

কিন্তু রোগীর এসব অভিমত অমূলক বলে মন্তব্য করেছেন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয়প্রধান অধ্যাপক ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘রোগীরা না থাকলে জোর করে রাখা যায় না। তবে আগুনে পোড়া রোগীর চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। আর সেটা হাসপাতালে থেকে করাটাই ভালো। আমরা রোগীদের বোঝাচ্ছি। তারপরও কেউ যদি বন্ডসই দিয়ে চলে যায়, আমাদের করার কিছু থাকে না। তাদের আমরা ছাড়পত্র দিচ্ছি।’

এদিকে ৩৬ এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও নার্সদের অগ্নিদগ্ধ রোগীদের দু’সপ্তাহের ওষুধ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান ও উপপরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনে গত ৯ জুন ‘চট্টগ্রাম মেডিকেলে পোড়া রোগীদের অনুদানের টাকা খরচ হবে অন্য খাতে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই চট্টগ্রাম মেডিকেল প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।

উপ-পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা বলেন, ‘হাসপাতালে বিএম ডিপোর বিস্ফোরণে চিকিৎসাধীন আগুনে পোড়া রোগীর জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী মজুদ আছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, রোগীদের জন্য বাইরের কোনো অনুদান আমাদের দরকার নেই। চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর আমরা বুঝতে পেরেছি রোগী ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় ওষুধ প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে আলাপের পর তিনিও সম্মত হন। তারপরই আমরা রোগীকে দু’সপ্তাহের ওষুধ দিতে নির্দেশ দিয়েছি ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সকে। আর যেসব চোখের রোগী আছেন, সেসব রোগী হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের তত্ত্বাবধানে থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আগুনে পোড়া রোগীদের জন্য সহায়তার দরকার নেই। সহায়তার নামে বিভিন্ন সংগঠন এসব চাঁদাবাজি বন্ধ করুক।’

আইএমই/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!