ফিল্মি স্টাইলে চট্টগ্রামে ঘর ভাঙচুর—লুটপাট, বাদ যায়নি ঘরের হাঁড়ি-পাতিলও

অনেকটা সিনেমার অ্যাকশান সিনের মতো দিন-দুপুরে ঘরে হামলা করে জিনিসপত্র ছিনতাই করে নিয়ে গেছে একদল দুবৃর্ত্ত। এসময় লুটপাটে বাঁধা দেওয়ায় বেধরক পেটানো হয় ঘরের নারীদেরকেও। লুটপাটের চিত্র এতটাই বেশি ছিলো যে বাদ যায়নি ঘরের টিভি ফ্রিজ, এমনকি হাঁড়ি-পাতিলও। হাতুঁড়ি দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে ঘরের ইটের দেওয়াল, চালের টিন।

এমনই এক বিভৎস লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর এলাকার মোহাম্মদ ইউসুফের বাড়িতে। গত ২ আগস্ট ঘটে এমন ঘটনা। ঘটনার একদিন পর ১১ জনের নাম উল্লেখ করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা হয়। এতে এখনো পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন, পাঁচলাইশ থানারর মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে মো.ইউসুফ, আব্দুল হকের ছেলে মো. তারেক, মো. নাজিম ও মো. নাঈম। এদের মধ্যে নাঈম ছাড়া বাকি তিনজন এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার আসামিরা হলেন, পাঁচলাইশ এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে মো.ইমরান (৩২), সুবিদ আহাম্মদের ছেলে শাহিদ আহাম্মদ (৪২) ও ঝান্টু (৪০), আদির মোহাম্মদের ছেলে মো. হায়দার আলী (৬০) প্রকাশ নিলু, বারেক মিয়ার ছেলে মো.সজীব (২৬), মো.জাহাঙ্গীরের ছেলে মো.ইউসুফ (২৬), আবু তালেবের ছেলে মো. মিজান (২৮),আব্দুল হক মিয়ার ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২৫) প্রকাশ জিকু, মো. আব্দুল হকের ছেলে মো. তারেক (২৪) এবং একই এলাকার আজগর আলী মিন্টু( ৪৭) ও মো.নাজিম (৪৫)।

মামলার নথিসূত্রে জানাযায়, বাদী মোহাম্মদ ইউসুফের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে বিবাদীদের। ইউসুফের বসত ভিটা নিজেদের দাবি করে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু আদালতের রায়ের আগেই জায়গাটি নিজেদের দাবি করে মো. ইমরান সঙ্গে ৩০-৫০ জন নিয়ে দখল করতে আসে ইউসুফের বসত ঘর। এসময় ঘরের লোকজন বাঁধা দিলে সঙ্গে থাকা লোকজন দেশীয় অস্ত্রহাতে হামলা করে ঘরের মানুষদের। এসময় ঘরের ক্ষতি ও আসবাবপত্র চুরিসহ সর্বমোট ১৪ লাখ ২৯ হাজার টাকার ক্ষতির দাবি করেন ভুক্তোভোগী পরিবারটি।

এ বিষয়ে মামলার বাদি ইউসুফ জানান, এ হামলা থেকে রেহায় পায়নি ঘরের মহিলারও। মো. ইমরানের নেতৃত্বে থাকা লোকজন হাতুঁড়ি দিয়ে ভাঙ্গতে থাকে ঘরের দেয়াল, একজন চালে উঠে হাঁতুড়ি দিয়ে ভাঙ্গতে শুরু করে টিনগুলো। আর কিছু ছেলে ঘরে ঢুকে মহিলাদের মারতে থাকে আর কেউ কেউ ঘরের আলমারি, সোফা, টিভি নিয়ে যায়।

ইউসুফ আরো জানান, ওদের অত্যাচার এতটাই বেশি ছিলো যে, ঘরে রান্না করার মতো কোন হাঁড়ি পাতিলও রেখে যায়নি। সবগুলো নিয়ে যায়, যাতে আমরা রান্না করে খেতে না পারি। ঘরের সমস্ত জিনিস নিয়ে গেছে ওরা, এমনকি ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট পর্যন্ত রেখে যায়নি ওরা।

ইউসুফের কথার সত্যতা পাওয়া যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শরীফ রোকনুজ্জামের সাথে কথা বলে। এ বিষয়ে তিনি জানান, ঘর থেকে লুটপাট হওয়া জিনিসগুলোর মধ্যে একটি আলমারি, একটি সোফা ও একটি লোহার গেইট উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ভুক্তভোগী ইউসুফ জানান, আদালতের রায়ে যদি আমাদের জায়গাটি ওদের বলে তখন আমরা ছেড়ে দিবো কিন্তু রায়ের আগে কিভাকে ওরা এমন জবরদখল করতে পারে? দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান ইউসুফ।

বিএস/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!